

এবিএনএ: পরিবেশের সংকটে ভোগা সেন্টমার্টিন দ্বীপ রক্ষায় সরকার নিচ্ছে সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানালেন, দ্বীপের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও স্থানীয় জনগণের বিকল্প জীবিকা নিশ্চিত করতেই নেয়া হচ্ছে এ উদ্যোগ।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, “সেন্টমার্টিনকে রক্ষা করতে হলে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার সমন্বয় ঘটাতে হবে। সে অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে।”
তিনি জানান, দরিদ্র কৃষিজীবীদের জন্য লবণ ও জলবায়ু সহনশীল সবজি ও ফসল চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কম্পোস্ট ও ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে সহায়তা থাকবে। নারিকেল গাছে জৈব বালাইনাশক ব্যবহারে প্রশিক্ষণসহ হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু পালনে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে।
স্থানীয় জনগণকে দক্ষ করে তুলতে জামাকাপড় সেলাই, টুপি তৈরি, ধাত্রীবিদ্যা ও বিভিন্ন পেশাভিত্তিক ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার, মোটর ড্রাইভিং, নৌযান চালনা, ইলেকট্রনিকস ও হোটেল ব্যবস্থাপনা। তরুণদের ‘ট্যুর গাইড’ হিসেবে তৈরি করে ‘পরিবেশ গার্ড’ গঠনেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
সভায় আরও জানানো হয়, মাছ ধরার নিষিদ্ধ মৌসুমে খাদ্য সহায়তা বাড়ানো হবে এবং পরিবেশবান্ধব জাল ও টেকসই মাছ ধরার সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে।
সভায় উপস্থাপিত চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা ছিল:
১. স্টাডিজ অ্যান্ড প্ল্যানিং,
২. পরিবেশবান্ধব বিকল্প জীবিকা প্রকল্প,
৩. ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন প্রস্তাবনা,
৪. টেকসই কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা।
এই সব প্রস্তাবনা ঘিরে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একটি সমন্বিত টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মো. নাভিদ শফিউল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. কামরুজ্জামান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। এছাড়া কোস্ট গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশও সভায় অংশ নেয়।