নতুন শেয়ারের সংকট: মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকিতে শেয়ারবাজার, তড়িৎ সংস্কারের আহ্বান
দ্রুত শেয়ার সরবরাহ না বাড়ালে বাজারে অতিমূল্যায়ন ও বিনিয়োগ ঝুঁকির আশঙ্কা, সরাসরি তালিকাভুক্তির প্রস্তাব ডিবিএ’র


এবিএনএ: এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ শেয়ারবাজারে চাঙ্গাভাব অব্যাহত। বহুদিন পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফিরেছে আশাবাদ, আর তারই প্রভাবে সূচক বেড়েছে ৪৫০ পয়েন্টের বেশি। দৈনিক লেনদেন ২০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৭০০ কোটিতে পৌঁছেছে। তবে বাজারসংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এই ধারা অব্যাহত থাকলেও নতুন শেয়ারের সরবরাহ না বাড়ালে কিছু শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে উঠতে পারে, যা ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করবে।
এই প্রেক্ষাপটে বাজারে নতুন শেয়ারের সরবরাহ নিশ্চিত ও স্থিতিশীলতা আনতে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ‘র সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনের তিন সদস্যও।
বৈঠক শেষে ড. আনিসুজ্জামান জানান, “নতুন শেয়ার আনতে শুধু বিএসইসি নয়, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকেও সচেতন হতে হবে। অতীতে যেমন অতিরঞ্জিত অডিট রিপোর্ট দিয়ে কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা হতো, সেই পথ আর কেউ নিতে চায় না। তাই শেয়ার সরবরাহ বাড়ানোর আগে মান নিয়ন্ত্রণ জরুরি।”
এ বিষয়ে ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “বাজারে বিনিয়োগ বাড়ছে ঠিকই, তবে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ধরে রাখতে হলে ভালো মানের নতুন শেয়ার তালিকাভুক্ত করতে হবে। একই শেয়ার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কেনাবেচা করলে দাম বাস্তবতার চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যাবে, যা বাজারের জন্য ক্ষতিকর।”
তিনি আরও জানান, কিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান—যেমন ইউনিলিভার, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ, সিডিবিএল—ডিরেক্ট লিস্টিং পদ্ধতিতে দ্রুত শেয়ারবাজারে আনা সম্ভব। পাশাপাশি অডিট রিপোর্টের মানোন্নয়ন ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে বাজারে আস্থা ফেরানো কঠিন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এদিকে শেয়ারবাজার সংস্কারে ১০ মাস আগে গঠিত টাস্কফোর্সের কার্যক্রম এখনও দৃশ্যমান নয়—এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ডিবিএ নেতারা। এছাড়া কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ডে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তারা।
ড. আনিসুজ্জামান আশ্বস্ত করে বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে আন্তঃসংস্থাগত সমন্বয়ে কাজ করছি। শেয়ারবাজারে হঠাৎ করে সংস্কার ফলপ্রসূ হয় না। সময় নিয়ে, সঠিক বিশ্লেষণ করে ধাপে ধাপে এগোনোর পরিকল্পনা আছে। বর্তমান সরকার হয়তো সব সংস্কার শেষ করতে পারবে না, তবে যাত্রা শুরু করবে।”