বিনোদন

কারাগারে বসেই বিয়ে, ধর্ষণ মামলার বাদীকেই স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন গায়ক নোবেল

কেরানীগঞ্জ কারাগারে গোপনে কাবিন, আলোচনায় ধর্ষণ মামলার বাদী ও নোবেলের সম্পর্কের নতুন মোড়

এবিএনএ: গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল আবারও চাঞ্চল্যের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে এবার কোনো গানের কারণে নয়, বরং এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সূত্র ধরে। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বসেই তিনি বিয়ে করলেন সেই নারীকে, যিনি কিছুদিন আগেই তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কারা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে এবং আদালতের অনুমোদনে এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির।

আদালতের অনুমতি আসে এর একদিন আগেই। ১৮ জুন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার, আসামিপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জ কারাগারে কাবিন সম্পন্ন করার আদেশ দেন। বিয়ের সময় ভুক্তভোগী ইডেন কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং তার সম্মতিতেই বিবাহ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

এই ঘটনা শুধু একটি প্রেমের সম্পর্ক বা বিয়ের গল্প নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে গুরুতর অভিযোগের ইতিহাস। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোবেল ও ইডেন কলেজের ওই ছাত্রীর পরিচয় হয়, যা পরে প্রেমে গড়ায়। অভিযোগ অনুযায়ী, ১২ নভেম্বর নোবেল তাকে স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান এবং সেখানে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ওই সময় ঘটনাটি ভিডিও করে রাখা হয় এবং মেয়েটির ফোন কেড়ে নিয়ে তা ভেঙে ফেলা হয়। পরবর্তীতে মারধর ও হুমকির মুখেও পড়েন তিনি। একপর্যায়ে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মেয়েটির পরিবার তা শনাক্ত করে এবং ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহায়তা চায়।

পুলিশ ১৯ মে রাতে অভিযান চালিয়ে নোবেলকে গ্রেপ্তার করে এবং ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। এরপর ডেমরা থানায় অপহরণ, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয় নোবেলের বিরুদ্ধে।

বর্তমানে নোবেল কারাগারে রয়েছেন। আর তার বিরুদ্ধে মামলা করা সেই নারী এখন আইনি বিবাহবন্ধনে তাঁর স্ত্রী। ফলে এ ঘটনা এখন নানা সামাজিক ও আইনি প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ ও আলোচনা করছেন—একই মানুষ কীভাবে অভিযোগকারী থেকে স্ত্রী হয়ে উঠলেন!

নোবেলের এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত, কারাগারে বসেই বিবাহ, এবং এর পেছনের জটিলতা দেশের আইনি কাঠামো ও সামাজিক বাস্তবতার মুখোমুখি নতুন প্রশ্ন তুলে দিলো।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button