অশ্রুসিক্ত গুয়াহাটি: লক্ষ মানুষের শেষ বিদায় সংগীততারকা জুবিন গার্গকে
আসামের সাংস্কৃতিক গর্ব জুবিন গার্গকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষের ঢল, কান্নায় ভেসেছে গুয়াহাটির প্রতিটি সড়ক।


এবিএনএ: গুয়াহাটি রোববার সকাল থেকেই পরিণত হয়েছিল শোকের শহরে। আসামের প্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গের মরদেহ দেশে পৌঁছাতেই হাজারো মানুষ অশ্রুসিক্ত চোখে শেষ বিদায় জানাতে ভিড় করেন।
লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণ করেন স্ত্রী গরিমা গার্গসহ রাজ্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ফুলে সাজানো অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ নেওয়া হলে কান্নাভেজা কণ্ঠে শোনা যায়— “জুবিন দা, তুমি অমর।” এরপর শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরিয়ে মরদেহ নেওয়া হয়, যেখানে সাধারণ মানুষ ফুল, গান ও অশ্রু দিয়ে ভরিয়ে দেন শেষ যাত্রাপথ।
গুয়াহাটির প্রতিটি রাস্তায় ভক্তদের ঢল নেমে আসে। ভবনের ছাদ, রাস্তার মোড় কিংবা গাছের ডালে দাঁড়িয়ে তরুণ-তরুণী থেকে প্রবীণ— সবাই চোখের জলে স্মরণ করেন প্রিয় শিল্পীকে। অনেকে তাঁর জনপ্রিয় গান গেয়ে বিদায় জানান, শিশুদের হাতে ছিল ফুল, প্রবীণদের ঠোঁটে স্মৃতিচারণা।
চার দশকের ক্যারিয়ারে জুবিন গার্গ শুধু আসামের নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের সংগীতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। গায়ক, সুরকার ও অভিনেতা হিসেবে তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। বলিউডে তাঁর গাওয়া ‘ইয়া আলি’ গান তাঁকে এনে দেয় আন্তর্জাতিক খ্যাতি।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে আসাম সরকার ও সাংস্কৃতিক মহল। মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “জুবিনদার প্রয়াণ আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি ছিলেন আসামের গর্ব।”
রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর মরদেহ রাখা হয় অর্জুন ভোগেশ্বর বরুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্সে, যেখানে লাখো মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরিবার জানায়, শেষকৃত্যের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শিগগির নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ৫২ বছর বয়সী জুবিন গার্গের মৃত্যু হয়। উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচাতে পারেননি।