ভাঙ্গায় টানা তৃতীয় দিনের অবরোধ: স্থবির সড়ক ও রেল যোগাযোগে ভোগান্তিতে জনসাধারণ
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নির্বাচনী সীমানা পরিবর্তনের প্রতিবাদে অবরোধের তৃতীয় দিনে বন্ধ হয়ে গেছে মহাসড়ক ও রেলপথের যোগাযোগ।


এবিএনএ: ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় নির্বাচনী সীমানা পরিবর্তনের প্রতিবাদে টানা তৃতীয় দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচি চলছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে মহাসড়কের পাশাপাশি রেলপথও অবরোধের আওতায় আসায় কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক ও রেল যোগাযোগ।
ভোর সাড়ে ৬টা থেকেই বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ভাঙ্গা পৌরসভা থেকে হামিরদী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা মহাসড়কে গাছ কেটে ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। ফলে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সাধারণ যাত্রীদের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
রেল যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। রেললাইনে গাছের গুঁড়ি ফেলে দেওয়া হলে খুলনা থেকে ঢাকাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেস মুকসুদপুর স্টেশনে আটকে যায়। ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মো. শাকিব আকন্দ জানান, সকাল সাড়ে আটটার দিকে ট্রেনটির ভাঙ্গায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও অবরোধের কারণে তা মুকসুদপুরেই থেমে আছে।
অবরোধকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন—“আমার মাটি, আমার মা, খণ্ড হতে দেবো না”, “রক্ত লাগে রক্ত নে, আমার মাটি ফিরিয়ে দে।” এলাকাবাসী জানান, নিজেদের ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ থেকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তে তারা ক্ষুব্ধ।
পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে মোতায়েন থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার মতো কোনো উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মো. রোকিবুজ্জামান জানিয়েছেন, অবরোধের কারণে মহাসড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অথচ ২০০৮ সাল থেকে ভাঙ্গা উপজেলা ফরিদপুর-৪ আসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এলাকাবাসী আন্দোলনে নেমেছেন।
প্রথম দফায় ৫ সেপ্টেম্বর ও দ্বিতীয় দফায় ৯ সেপ্টেম্বর অবরোধ পালনের পর আজ তৃতীয় দিনের কর্মসূচি চলছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন রাতে অবরোধ স্থগিত রেখে সকালে আবার নতুনভাবে আন্দোলন শুরু করছেন তারা।
গত রবিবার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোও এ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে এক্সপ্রেসওয়েতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এবং পাশাপাশি আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।