ডেঙ্গু প্রতিরোধে নতুন দিগন্ত: ঢাকায় সফল ‘ভালো মশা’ প্রযুক্তি
উলবাকিয়া-আক্রান্ত এডিস মশা দিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক সাফল্য, বাংলাদেশে নতুন আশার আলো

এবিএনএ: বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত এডিস ইজিপ্টি মশা তৈরি করে ঢাকার পরিবেশে সফলভাবে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। এই মশাগুলোকে ‘ভালো মশা’ বলা হচ্ছে, যা ডেঙ্গু ভাইরাসের বিস্তার রোধে কার্যকর।
এই গবেষণায় অংশ নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গহোফার মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, আইসিডিডিআর,বি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির বিজ্ঞানীরা। গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ‘নেচার’ জার্নালের সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে প্রকাশিত হয়েছে।BSS+1Prothomalo+1
উলবাকিয়া একটি প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া, যা এডিস মশায় সংক্রমিত হলে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করে। মানুষ বা পরিবেশের জন্য এটি ক্ষতিকর নয়। এই মশাগুলো দুটি কৌশলে ব্যবহৃত হয়:Prothomalo+2সময় নিউজ | সময়ের প্রয়োজনে সময়+2Bangla Tribune+2
-
দমন কৌশল: শুধু পুরুষ উলবাকিয়া মশা ছাড়া হয়, যা স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হয়ে ডিম নিষ্ক্রিয় করে, ফলে মশার সংখ্যা কমে যায়।
-
প্রতিস্থাপন কৌশল: পুরুষ ও স্ত্রী উভয় মশা ছাড়া হয়, এবং উলবাকিয়া আক্রান্ত স্ত্রী মশা প্রজন্মের পর প্রজন্মে এই ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে দেয়, যা বন্য মশাদের প্রতিস্থাপন করে।Prothomalo
গবেষণায় দেখা গেছে, উলবাকিয়া-আক্রান্ত মশাগুলো ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষমতা ৯২.৭% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে সক্ষম। এছাড়া, এদের প্রজননক্ষমতা ও টিকে থাকার ক্ষমতা স্থানীয় মশার সমান, যা পরিবেশে ছাড়ার জন্য উপযুক্ত করে তোলে।
আইসিডিডিআর,বি’র বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, “উলবাকিয়া মশা জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত নয়, এটি প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া বহন করে। গবেষণায় এটি ক্ষতিকর নয়, বরং উপকারী প্রমাণিত হয়েছে। এটি ডেঙ্গু ও অনুরূপ ভাইরাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য নতুন প্রতিরক্ষার পথ খুলে দিতে পারে।”
এই প্রযুক্তি ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্রে সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশেও এই পদ্ধতি ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
Share this content: