
এবিএনএ: আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সতর্ক পাহারায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। বুধবার (২৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল (মঙ্গলবার) বলেছেন ১০ ডিসেম্বর থেকে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন শুরু। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলায় একটা কথা আছে না- খালি কলসি বাজে বেশি। মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতাদের বক্তব্য হচ্ছে খালি কলসি বেশি বাজার মতো। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে যেভাবে বাগাড়ম্বর করছেন। এতেই মনে হচ্ছে খালি কলসিটা বেশি বাজে। আর ওনারা তো এক দফার আন্দোলনে আছেনই। ওনারা তো সরকারের পদত্যাগ দাবি করছেন ১২/১৩ বছর ধরে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর কী হবে, সেটা আমরা জানি ও বুঝি। কারণ, সারাদেশে তো ওনারা সমাবেশ করেছেন। সমাবেশের নামে কোন কোন জায়গায় পিকনিক করেছেন। কোন কোন জায়গায় তারা সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি করেছেন। সমাবেশের যে হাঁকডাক বিভাগীয় পর্যায়ে দিয়েছিলেন, সেই হাঁকডাকের কোন প্রতিফলন সমাবেশগুলোতে ছিল না।’
বিএনপির সমাবেশগুলোতে সরকার সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করেছে দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা সেজন্য নির্বিঘ্নে সমাবেশগুলো করতে পেরেছে। কিন্তু তারা যখন ক্ষমতায় ছিল আমাদের সমাবেশে গ্রেনেড ও বোমা হামলা চালিয়েছে। বহু মানুষকে হতাহত করেছে। তাদের সমাবেশে কিন্তু আজ পর্যন্ত একপা পটকাও ফোটেনি।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব কী কারণে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চান। ওনারা বিশাল সমাবেশ করবেন। কেউ বলছেন ১০ লাখ, আবার গতকাল এক টেলিভিশনে দেখলাম ২৫ লাখ। নয়াপল্টনে কোন রকমে ৫০ হাজার মানুষ ধরে আর কি! এক কিলোমিটার পর্যন্ত যদি বন্ধ করা যায় তাহলে ৫০ হাজার মানুষ ধরে। তাহলে নয়াপল্টনে করার উদ্দেশ্যের মধ্যে বুঝা যায় যে সমাবেশ আগে থেকেই ফ্লপ।’
‘সমাবেশে কেন একটি প্রধান রাস্তা বন্ধ করে করতে হবে। আমরা কী কোন প্রধান রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করি? তারা অন্যান্য জায়গায় যে সমাবেশগুলো হয়েছে, সেগুলোও তো মাঠেই হয়েছে। তারা যে বিশাল মানুষের সমাবেশ করতে চায়, তেমন মাঠ তো ঢাকা শহরে নেই। সেই রকম যদি করতে হয় তাহলে আমি পূর্বাচল ছাড়া কোন জায়গা দেখি না।’ গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ১০ তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে, কখন আপনাদের ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হবে- এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে মন্ত্রী উল্টো প্রশ্ন করেন, গয়েশ্বর বাবু কী দিনে বলেছেন না রাতে বলেছেন।
‘দিনে বলেছেন’ জানাতে তিনি মৃদু হেসে বলেন, ‘তো ওনারা তো আমাদের তাড়িয়ে দিতে চাচ্ছেন ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে। বাস্তবতা হচ্ছে ওনাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুচলেকা দিয়ে চলে গেছেন দেশ থেকে। গয়েশ্বর বাবুরা যারা বলেন এ সব কথা, তারা জামিন নেওয়ার জন্য বোরকা পড়ে হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন। যারা বোরকা পরে হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন, সেই নেতাদের ওপর তাদের কর্মীদেরও কোন আস্থা নেই। এটা তাদের অতীতের মতো বাগাড়ম্বর সেটি তাদের নেতাকর্মীরাও বুঝেন।’
আওয়ামী লীগ ৯ ডিসেম্বর সমাবেশ করবে কি না- জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৯ তারিখ কিংবা ১০ তারিখও সমাবেশ করতে পারি। এতে কী কারও বাধা আছে? তারা যেখানে করবে সেখানে না করে আমরা ১০ তারিখ সমাবেশ করতে পারি। এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আমরা যা করব দেশের শৃঙ্খলা, স্থিতি এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য।’
Share this content: