এবিএনএ : জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব অধ্যাপক মাওলানা সালাহউদ্দিন আর নেই। আজ বিকাল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এই খবর সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার বড় শ্যালক হাবিবুর রহমান।
মাওলানা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ২০০৯ সালের ৫ জানুয়ারি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত অন্যতম বৃহত্তম জামে মসজিদ গাউছুল আজম আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) জামে মসজিদের খতিব হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।
সালাহউদ্দিন নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের হাজরাদী গ্রামে ১৯৪৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে স্থানান্তর হয়ে বন্দর ইউনিয়নের কলাবাগ গ্রামে বসবাস শুরু করেন। তার ৩ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তান রয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করলেও, তারা বর্তমানে ঢাকার ঝিকাতলার স্থায়ী বাসিন্দা।
মাওলানা সালাহউদ্দিন ১৯৬৪ সালে পূর্বপাকিস্তান মাদ্রাসা বোর্ড হতে কামিল প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান ও ১৯৬৫ সালে একই বোর্ড হতে যথাক্রমে আদব ও আদব কামিল প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. এ. প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানে উত্তীর্ণ হন। তিনি উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য সৌদি আরবের মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ও ১৯৮৪ সালে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ডিপ্লোমা প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
তিনি শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৬৪ সালে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি এই মাদ্রাসায় ১৯৯০ সালে অধ্যক্ষের দায়িত্ব লাভ করেন। ২০০০ সাল পর্যন্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর অবসরগ্রহণ করেন। তিনি এক্সিম ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, আইসিবি ব্যাংক সাউথ ইষ্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংকের শরিয়া কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি ঢাকা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক শরীয়া কাউন্সিলের সদস্য ও ইসলামি ব্যাংক কেন্দ্রীয় শরিয়া বোর্ডের মেম্বার ছিলেন।
সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্স ইসলামি তাকাফুলের শরিয়া কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। ঢাকা সিটি কলেজ ও কাকলী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও শ্রীপুর বাগনাহাটি কামিল মাদরাসার পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তিনি রেডিও-টেলিভিশনের বিভিন্ন ইসলামি অনুষ্ঠানে তাফসির ও মাসয়ালা-মাসায়েল বিষয়ক আলোচনা করতেন। তিনি আকিদাহগতভাবে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনুসারী ছিলেন। আর মাজহাবগতভাবে হানাফি মাজহাবকে অনুসরণ করতেন।