জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

২০১৯ সালে চট্টগ্রামের ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে ভিসা দিয়েছে ভারত

এবিএনএ : ২০১৯ সালে চট্টগ্রামের ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে ভিসা দিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৮ সালে এ সংখ্যাটা ছিল ১ লাখ ৯০ হাজার। রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে নগরের পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি। অনিন্দ্য ব্যানার্জি বলেন, ‘আমি চট্টগ্রামে এসেছি দুই বছর হলো। ইতোমধ্যে ভিসা পদ্ধতিকে সহজ ও সহজতর করতে আমরা নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছি। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম থেকে আমরা ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে ভিসা দিয়েছি। ২০১৮ সালে যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৯০ হাজার, যেটি একটি রেকর্ড।’

প্রান্তিক ও দূরবর্তী এলাকাগুলোতে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতীয় ভিসার চাহিদা পূরণ ও ভিসা প্রাপ্তি সহজ করার লক্ষে গত বছর ২ জানুয়ারি থেকে আরও তিনটি ভিসা আবেদন কেন্দ্র কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালু হয়েছে বলেও জানান সহকারী হাইকমিশনার। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাবাহিনী একসঙ্গে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে এক স্থায়ী বন্ধন তৈরি করে গেছেন। যা ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে। কোনো অপশক্তি এ শাশ্বত বন্ধনকে ছিন্ন করতে পারবে না।’

‘ভারত ও বাংলাদেশ ১৯৭১ সাল থেকে একসঙ্গে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। দুই দেশের অর্থনীতি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজকে আমাদের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো। ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়। আমাদের কাছে প্রতিবেশী প্রথমে। প্রতিবেশীদের মধ্যে বাংলাদেশ সবার আগে’-যোগ করেন অনিন্দ্য ব্যানার্জি।তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ভারত সফরে ৭টি এমওইউ সাইন করেন এবং ৩টি দ্বি-পাক্ষিক প্রজেক্ট উদ্বোধন করেন। আমাদের দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকগুলোতে সিকিউরিটি, বিজনেস, কানেকটিভিটি, ডিফেন্স, ডেভেলপমেন্ট, কো-অপারেশন, এনার্জি, এডুকেশনসহ দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্কের প্রায় সকল বিষয়ে তারা আলোচনা করেছেন। আমাদের পলিসি হলো-একসঙ্গে সবার উন্নতি, একটাই লক্ষ্য অনুসরণ করে।’

বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নে ভারত সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে বলে তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের কমিটেড ডেভেলপমেন্ট পার্টনার। দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আমাদের জয়েন্ট ইনিশিয়েটিভ প্রমাণ করে আমাদের এ সহযোগিতা দুই দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য। প্রতিবেশী হিসেবে কিছু সমস্যা থাকতেই পারে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এ সমস্যাগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে খুব সহজেই সমাধান করা যাবে।’ খুব শিগগির ভারত-বাংলাদেশ দুটি গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিকী একসঙ্গে পালন করবে বলে জানান অনিন্দ্য ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ও ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরুর ৫০ বছর পূর্তি। এ দুটি ঐতিহাসিক দিবসকে স্বরণীয় করে রাখতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও বাড়ানো হবে। আমরা আমাদের কূটনৈতিক ও অন্যান্য সম্পর্কগুলোকে সোনালী অধ্যায়ের ঊর্ধ্বে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, ওয়াসিকা আয়েশা খান, খদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, কক্সবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ, বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, চুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল আলম ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত।

Share this content:

Related Articles

Back to top button