এ বি এন এ : সংসদের মাধ্যমে বিচারক অপসারণ প্রক্রিয়াকে ‘ইতিহাসের একটি দুর্ঘটনা’ বলা হয় আদালতের রায়ে। ওই রায়ের পর জাতীয় সংসদে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক হাই কোর্টের ওই রায়কেই ‘সংবিধান পরিপন্থি’ বলেছেন।
রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিচারপতিদের বেতন-ভাতার বিল সংসদে উত্থাপনের সময় ওয়াকআউট করেন বিরোধী দলের সদস্যরা।
এ বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত শিরোনামের দিকে ইংগিত করে রবিবার সাংবাদিকরা আইনমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ওই রায় নিয়ে রাষ্ট্রের দু’টি প্রতিষ্ঠান মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেল কি-না। উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু সময় আবেগও কাজ করে। কিন্তু সর্বোপরি আমি বলতে পারি, সংসদ সদস্যরা যেহেতু আইন প্রণয়ন করেন, বিচার বিভাগ যেহেতু তার ব্যাখ্যা দেন, সেই কারণে এই সব বক্তব্যে যদি কেউ বলে যে আইনসভা ও বিচার বিভাগ মুখোমুখি- আমি সেটা মানতে রাজি না।
রবিবার রাজধানীর বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রারদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
সংসদ সদস্যদের ওই বক্তব্য ‘আবেগের বহিঃপ্রকাশ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেছেন, এতে সংসদ ও বিচার বিভাগের মুখোমুখি হওয়ার কোনো কারণ নেই।
গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দিয়ে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। এর ফলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল নিয়ে সংসদ অধিবেশনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, গণতন্ত্রের বিকাশে’ রাষ্ট্রের তিন স্তম্ভের মধ্যে বিতর্ক হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তিনি বলেন, একটা গণতন্ত্রের রুট গ্রো করতে চাইলে এই রকম সমস্যা-বিতর্ক রাষ্ট্রের তিনটা স্তম্ভের মধ্যে হয়, এটা স্বাভাবিক।
উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালে সরকার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনে। এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতি হাইকোর্টের রায়ে ওই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা হয়।