
এবিএনএ : ১৯৭২ সালের করা বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান ভালো ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ। তিনি দাবি করেছেন, এই সংবিধান আওয়ামী লীগই নষ্ট করেছে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় জোট সরকারের আমলের আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকতেই সংবিধানে চারটি সংশোধনী আনা হয়েছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত ছিল চতুর্থ সংশোধনী। তবে তিনি প্রথম সংবিধানে রাষ্ট্রীয় চার মূল নীতিতে হাত দেননি। এগুলো ছিল: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং সামাজিক ন্যয়বিচার অর্থে সমাজতন্ত্র।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সেনা প্রধান থাকা অবস্থায় ক্ষমতায় আরোহনের পর সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনী এনে রাষ্ট্রীয় চার মূল নীতিতে পরিবর্তন আনে। আর এতে রাষ্ট্রের পরিচয় পাল্টে গেছে বলে সমালোচনা আছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বারবার ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার কথা বলে আসছেন। সম্প্রতি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলাতেও এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। বিচারক অপসারণ ক্ষমতা সংসদে ফিরিয়ে এনে এই সংশোধনী পাস হয়েছিল সংসদে। তবে সেটা অবৈধ ঘোষণা হয়েছে উচ্চ আদালতে।
মওদুদ বলেন, ‘সেই সংবিধান তো ভালো ছিলো। কিন্তু আপনারা সেটি নষ্ট করেছেন।৭২ এর সংবিধান যারা রচনা করেছিলেন তারা তা নষ্ট করে এদেশে বাকশাল কায়েম করে জনগণের অধিকার হরণ করেছিলেন।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠানা জিয়াউর রহমানের প্রশংসা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং বিচারপতিদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সুপ্রিম জুড়িশিয়াল কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন। ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে আবারও সুপ্রিম জুড়িশিয়াল কাউন্সিলের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠিত হলো।’
‘বর্তমান সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুরোপুরি নস্যাৎ করার পায়তারা করে ব্যর্থ হয়ে হয়েছে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের এই রায় একটি ঐতিহাসিক রায়। এই রায় জনগণের পক্ষে গেছে।’
প্রধানমন্ত্রী দ্বিমুখী আচরণ করছেন এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্দলীয় সরকারের জন্য দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিশ্চিত করে নির্বাচন করেছিলেন, অথচ এখন ক্ষমতায় থেকে তিনি নির্দলীয় সরকারের বিরোধিতা করছেন, যা পুরোপুরি দ্বিমুখী আচরণ।’
ক্ষমতায় গেলে আইন করে অথবা সংবিধান সংশোধন করে বিএনপি বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করবে বলেও জানান মওদুদ। বলেন, ‘এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত হবে।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে আলাদা সচিবালয় প্রয়োজন, যা বিএনপি প্রতিষ্ঠা করবে। তাহলে বিচার বিভাগের ওপর আর কারো কোন হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকবে না।’
‘স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন’ আয়োজিত আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দীন খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Share this content: