আমেরিকালিড নিউজ

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র রুখে দিতে তৈরি ‘থাড’

এবিএনএ : উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করে দিতে এখন প্রস্তুত দক্ষিণ কোরিয়ায় স্থাপিত যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘থাড’। থাড-এর পুরো নাম ‘টার্মিনাল হাই-অলটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স’ (টিএইচএএডি)। মার্কিন সামরিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রতিরক্ষাব্যবস্থাটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে প্রাথমিকভাবে সক্রিয় হলেও পুরোপুরি কাজ শুরু করতে আরও কয়েক মাস লেগে যাবে।
উত্তর কোরিয়ার মিত্র চীন থাডের কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। বেইজিংয়ের আশঙ্কা, দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার রাডারের মাধ্যমে চীনের ভূখণ্ডেও গুপ্তচরবৃত্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে। চীন প্রথম থেকেই তার দোরগোড়ায় এটি মোতায়েনের বিরোধিতা করে আসছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেঙ সুয়াং গতকাল মঙ্গলবারের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে থাড-এর কথা সরাসরি উল্লেখ না করে বলেন, ‘নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা অটলভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’
উত্তর কোরিয়া গতকাল বলেছে, কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ওয়াশিংটন। দেশটির অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বোমারু বিমান তার ভূখণ্ডে ‘বড় কোনো লক্ষ্যে পারমাণবিক বোমা ফেলার কসরত’ করেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ বলে, ‘এই বেপরোয়া সামরিক উত্তেজনা কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু যুদ্ধের নিকটবর্তী করছে।’
গত ১১ বছরে পাঁচবার পরমাণু পরীক্ষা চালানো উত্তর কোরিয়া গত সোমবার হুমকি দিয়েছে, তারা খুব শিগগির ষষ্ঠবারের মতো পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালাবে। কেসিএনএ বলেছে, শীর্ষ নেতার নির্দেশক্রমে ‘যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময়’ এ পরীক্ষা চালানো হবে।
পিয়ংইয়ংয়ের অব্যাহত পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কারণে সৃষ্ট আঞ্চলিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি রণতরির বহর সম্প্রতি কোরীয় উপদ্বীপের কাছে পৌঁছেছে। ক্ষেপণাস্ত্রবাহী একটি ডুবোজাহাজও ভিড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছে দুটি মার্কিন বি-ওয়ানবি ল্যান্সার বোমারু বিমান।
মার্কিন যুদ্ধজাহাজ কার্ল ভিনসনসহ রণতরী বহরকে নতুন জ্বালানি সরবরাহ করতে আসা যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজকে নিরাপত্তা দিতে জাপান তার সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ ‘ইজুমো’কে পাঠিয়েছে। নিজেদের সামরিক বাহিনীর ভূমিকা বাড়াতে আবে সরকার ২০১৫ সালে বিতর্কিত আইন পাস করার পর এই প্রথম এ ধরনের অভিযানে অংশ নিল জাপান। হেলিকপ্টারবাহী জাহাজ ইজুমো জাপানের জলসীমায় মার্কিন জ্বালানিবাহী জাহাজকে পাহারা দেবে।
কিমের সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী ট্রাম্প
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার বলেছেন, ‘উপযুক্ত পরিস্থিতিতে’ উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারলে তিনি ‘সম্মানিত’ বোধ করবেন।
এর আগের দিনই গত রোববার সিবিএস নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে উত্তর কোরিয়ার কারণে সৃষ্ট হুমকি নিরসনে নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তিনি এতে বলেন, ‘যা হচ্ছে, তা বছরের পর বছর ধরে চলতে দিতে পারি না আমরা।’ এ সাক্ষাৎকারেই ট্রাম্প কিমকে ‘বেশ চালু লোক’ আখ্যা দেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের সেজং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষক হং হিউন-ইক মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দৃশ্যত কয়েক সপ্তাহের চরম উত্তেজনা থেকে ‘বের হওয়ারই পথ খুঁজছেন’।

Share this content:

Related Articles

Back to top button