এবিএনএ : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নির্বাচন কমিশনকে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে নির্বাচন পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছেন। এই নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যেন কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে দৈনিক প্রথম আলো আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তারা এসব কথা বলেন।
‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, আশা ও শংকা’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকে আইভী ও সাখাওয়াত ছাড়াও ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মেয়র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাসুম বিল্লাহ। গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিকেএমই্এর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, সুজনের জেলা সভাপতি আব্দুর রহমান, মহানগরের সভাপতি আহসানুল করিম চৌধুরী বাবুল, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুস, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, নারীনেত্রী লক্ষ্মী চক্রবর্তী প্রমুখ।
সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের ১৩ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন আইভী। কিন্তু তিনি তার প্রতিশ্রুতির সিকিভাগ কাজ করতে পারেননি। এজন্যই তিনি এখন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
সাখাওয়াত বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ৯৮ ভাগ মানুষ নিরীহ এবং সহজ সরল। মুষ্টিমেয় কয়েকজন মানুষের জন্য নারায়ণগঞ্জে ওপর সন্ত্রাসের কলঙ্ক লেগেছে।’ সাখাওয়াত হোসেন খান নিজেকে একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ দাবি করে বলেন, ‘আমি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। আমি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জন্য আমার পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তাই করার চেষ্টা করবো।’ বিএনপি প্রার্থী বলেন, ‘শীতলক্ষ্যা নদীর কারণে মানুষের দুর্ভোগ। কিন্তু নারায়ণগঞ্জবাসী সেই সেতু এখন পর্যন্ত পায়নি। নারায়ণগঞ্জের মানুষের ওপর হোল্ডিং টেক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি বেড়েছে কয়েক হাজার গুণ। কিন্তু সে অনুযায়ী সিকিভাগ উন্নয়ন নারায়ণগঞ্জে হয়নি। নারায়ণগঞ্জে একটি ভালো স্কুল, কলেজ, মেডিকেল কলেজ, শ্রমিকদের হোস্টেল নেই। নির্বাচনে জনগণ যদি আমার ওপর বিশ্বাস রাখে তবে আমি এসব উন্নয়ন করে নারায়ণগঞ্জকে একটি আধুনিক সিটি করপোরেশন হিসেবে গড়ে তুলবো।’
পরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বিএনপির প্রার্থীর প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সাখাওয়াত ভাই যদি বলেন তার বাসার হোল্ডিং নাম্বার কত, আর কত টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স বেড়েছে তবে আমি এর ব্যাখা দেবে। কারন এর আগে দুটি টেলিভিশন টক শোতে আমি এর জবাব দিয়েছি। কিন্তু তার পরও সাখাওয়াত ভাই নির্বাচনী স্টান্ডবাজি করতে শেখানো বুলির মতো এসব কথা বলছেন।’ কারও প্ররোচনায় নয়, তথ্যসমৃদ্ধ কথা বলার আহ্বান জানান আইভী।
সাখাওয়াত হোসেন খানের শঙ্কার জবাবে আইভী বলেন, ‘সরকারি দলের প্রার্থী আমি একজন নিরীহ মানুষ। আমার কোনো পিস্তল, মাস্তান বাহিনী নেই। আপনি আরামেই আছেন। আমার পেছনে আপনার চেয়ে একটি বিশাল শক্তি লেগে আছে। আমি সেই কারণে অনেক সর্তকভাবে নির্বাচন পরিচালনা করছি।’
সাখাওয়াতের পোস্টার ছেঁড়ার জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এসব নোংরা রাজনীতি করি না।’
বিপ্লবী ওয়াকার্স পাটি প্রার্থী মাহবুবুর রহমাম ইসমাইল বলেন, ‘সন্ত্রাসের জনপদ নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন হচ্ছে। এই নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। আমার বারুদের উপর দাঁড়িয়ে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। যেকোনো সময় নির্বাচন নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেতে পারে।’ নির্বাচন কমিশনকে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি।
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাছুম বিল্লাহ মিডিয়ার সমালোচনা করে বলেন, ‘মিডিয়া বড় দুই দলের প্রার্থীর পেছনে ছুটে। কিন্তু আরও যারা প্রার্থী আছি তাদের কাভারেজ দেয় না। ফলে আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।’