
এবিএনএ : বিএনপির নেতারা দলের ‘হাই কমান্ডকে’ খুশি করতে অতি কথনে নেমেছেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের।রবিবার সচিবালয়ে নিজের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেন। কাদের বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে কে বেশি সরকার-বিরোধী কথা বলতে পারে। কে বেশি সরকারি-বিরোধী আক্রমণাত্মক, বিদ্বেষপ্রসূত কথা বলতে পারে, কে বেশি নেতিবাচক কথা বলতে পারে।’ ‘সেটার ওপরই হাইকমান্ডের এসিআরের বিষয় আছে। এখন সেখানে প্রতিযোগিতা হচ্ছে হাইকমান্ডকে খুশি করার জন্য সরকার-বিরোধী বক্তব্য দেয়া।’
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের বিষয়ে বিএনপি কেন একেকবার একেক কথা বলে, সেটিও জানতে চান কাদের। তিনি বলেন, ‘তিনটা সরকার এ পর্যন্ত শুনলাম। একটা হচ্ছে নিরপেক্ষ সরকার, একটা হচ্ছে সহায়ক সরকার, আরেকটা হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার।’ ‘এখন আবার শুনছি, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বললেন, তারা শিগগিরই সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন। একই দিন মওদুদ সাহেব বললেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়ক সরকারের রূপরেখা কী সে বিষয়ে স্পষ্ট জানতে চাইবেন।’
কাদের বলেন, ‘তাহলে কী দাঁড়াল? এখানে আমি কী জবাব দেবো? এখানে আমার কোনো জবাব নেই, উত্তর নেই। আগে নিজেরা ঠিক করুন- তারা নিজেরা করবেন না প্রধানমন্ত্রী সহায়ক সরকারের…।’ এটা তো একটা আজগুবি ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী তাদের সহায়ক সরকারের রূপরেখা কী করে দেবেন? সহায়ক সরকারের দাবি হচ্ছে তাদের রূপরেখা দেবেন তারা। এটা তো স্ব-বিরোধিতা, দ্বিচারিতা। একেকজন একেক কথা বলছেন।’‘তাদের (বিএনপি নেতা) নিজেদের মধ্যে ঠিক করতে হবে সহায়ক সরকারের রূপরেখা তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাইবেন নাকি তারা নিজেরা ঠিক করবেন।’সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ৮০ শতাংশ ভোট পাবে-দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন দাবির জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘দেশের ৮০ ভাগ মানুষ বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে ঘৃণা করে। যারা ঘৃণা করে তারা তাদের ভোট দেবে?’
‘কেন সংলাপ?’
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়ে দেন আওয়ামী লীগ নেতা।
কাদের বলেন, ‘নির্বাচনী ইস্যু নিয়ে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। কোনো প্রয়োজন আমরা দেখছি না। নির্বাচন হবে, সংলাপ কেন করতে হবে- বিএনপিকে কিছু সুযোগ দেয়া ছাড় দেয়া? নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির অধিকার। এটা ছাড় দেয়া কিংবা সুযোগের বিষয় নয়।’
‘ভুল তো বিএনপিরই’
২০১৩ সালে সংসদে থাকায় নির্বাচনকালী সরকারে বিএনপিকে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এবার বিএনপি সংসদে নেই। তাহলে তারা নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারবে কি না- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘যখন তাদের পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব ছিল তখনও কিন্তু তারা এটায় (নির্বাচনকালীন সরকার) যোগ দেয়নি। এবার তারা দাবি করে কি না আমরা একটু দেখি। সহায়ক সরকার বলতে যে বিষয় সেখানে তাদের রূপরেখা দেবে, আমরা দেখি তারা কী করে, তাদের দাবি কী?’।
‘দেখুন সেই ভুলটা তাদেরই। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনকালীন সরকার যেভাবে হয় সেভাবেই হবে।’কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনকালীন সরকার, সেই সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবে। এটাই সংবিধানের বিষয়, এটাই নিয়মের বিষয়। এটাই আমাদের দেশে হয়ে আসছে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে এভাবেই প্র্যাকটিস হচ্ছে।’
‘ভোট বানচালে দুরভিসন্ধি বিএনপিরই’
বিএনপি নির্বাচনে এলে পরাজয় হবে এবং এ কারণে আওয়ামী লীগ নির্বাচন বানচাল করবে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ।এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘‘আসলে এসব কথার মনে হয়, নির্বাচন বানচালের দুরভিসন্ধি তাদের (বিএনপি) মধ্যে কাজ করছে। তাহলে যার কোনো অস্তিত্ব নেই তা নিয়ে তারা কথা বলে কেন?’
বিএনপিকে ভোটের বাইরে রাখতে সরকার ছক কষছে-বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখার ছক কাটার তো কোনো কারণ নেই। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা কি আমাদের আছে? আমাদের নেই। আমাদের কাজ আছে, আমাদের উন্নয়ন আছে।’
Share this content: