
শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৪১টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঢাকার ২০টি ও ঢাকার বাইরে ২১টি। এতে নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৯ হাজার ৫৩৯টি। এর মধ্যে পরীক্ষা হয়েছে ৮ হাজার ৫৮২টি। এটিই একদিনে সর্বোচ্চ পরীক্ষা, যাতে এ পর্যন্ত সর্বাধিক শনাক্ত হন আরও ১ হাজার ২০২ জন। এর আগে গত ১৩ মে সর্বাধিক ১১৬২ জন শনাক্ত হয়েছিলেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২০ হাজার ৬৫ জনে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬০ হাজার ৫১২টি পরীক্ষা করা হয়েছে বলেও জানান অধ্যাপক নাসিমা।
এ সময় দেশব্যাপী শনাক্তের হার জানান নাসিমা। তিনি বলেন, ঢাকা বিভাগ ও সিটির মধ্যে শনাক্তের হার ৭৯.৫৪ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৫৮.১১ শতাংশ ও এই বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে ২১.৪৩ শতাংশ, যার মধ্যে নারায়ণগঞ্জে সর্বাধিক। এছাড়া, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮.৪৭ ময়মনসিংহ ৩.৫০, রংপুর ২.৫৩, বরিশাল ১.১০, সিলেট ১.৫৪, রাজশাহী ১.৩৯ শতাংশ হারে করোনা রোগী শনাক্ত।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৫ জন। যাদের মধ্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান রয়েছেন। নতুন মৃতদের মধ্যে ৮জন নারী, ৭জন পুরুষ।
বয়স ভিত্তিক বিবেচনায় নতুন মৃতরা ৮১-৯০ বছরের মধ্যে ২জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৮জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ১জন, ২১-৩০ বছরের মধ্যে ১জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু বরণ করলেন মোট ২৯৮।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭৯জন সুস্থ হয়েছেন বলেও জানান নাসিমা। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৩৮৮২জন।
‘আইসোলেশনে এসেছেন ২৫৯জন, ছাড় পেয়েছেন ৮১জন। বর্তমানে আছেন ২ হাজার ৭৪৮জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৪৭৯জন।
ব্রিফিংয়ে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক নাসিমা বলেন, তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করবেন। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন। ভিটামিন সি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কথাও বলেন তিনি।
চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।
এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।
ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ষষ্ঠ দফায় বাড়ানো ছুটি চলবে ১৬ মে পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার তথ্যানুযায়ী শুক্রবার সকালে পর্যন্ত, বিশ্বে তিন লাখ তিন হাজার ৩৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিড-১৯ এ। একইসঙ্গে আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা হয়েছে ৪৫ লাখেরও বেশি মানুষ। আর ১৭ লাখেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন।
Share this content: