এবিএনএ: ২০২৩ সালের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষাও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা ২০২২ সালের জন্য পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে। আর এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষাও ২০২২ সালের জন্য ১৮০ কর্মদিবসের পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে।
মন্ত্রী জানান, আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা এপ্রিলে এবং উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা জুনে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া পরীক্ষা পূর্ণ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা সব বিষয়ে হবে এবং পূর্ণ নম্বরে হবে। তবে এ বছর জেএসসি পরীক্ষার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলে জানান মন্ত্রী। মহামারির কারণে গত দু বছর অষ্টম শ্রেণির এ সমাপনী পরীক্ষা হয়নি।
সাধারণত ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক এবং এপ্রিলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে এলেও করোনাভাইরাস মহামারী সেই সূচি পাল্টে দিয়েছে। ২০২০ সালে কোভিডের সংক্রমণ শুরুর আগেই এসএসসির পরীক্ষা নিতে পেরেছিল সরকার। পরে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সে বছর আর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। তার বদলে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন ফল দেওয়া হয়। দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ২০২১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষাও পিছিয়ে যায়। নয় মাস পিছিয়ে নভেম্বরে এসএসসি ও আট মাস পিছিয়ে ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় গতবছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় তিন বিষয়ে। আর এইচএসসি পরীক্ষা হয় তিন বিষয়ের ছয়টি পত্রে। আজকের সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়নি। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ওমিক্রনের প্রভাব শুরু হওয়ার আগে চলতি বছর ১৪ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহে দু’দিন করে সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে তারা। এর মধ্যে ২০ জানুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওমিক্রনের সংক্রমণে আবারও প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
তিনি জানান, গেল ১৫ মার্চ থেকে তারা সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে সপ্তাহে ছয় দিন করে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে এই নবম ও দশম শ্রেণিতে মিলে সর্বমোট ১৬২ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেওয়া সুযোগ পাবে। যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় তারা ৩১৬ কর্মদিবস ক্লাস করার কথা। তাছাড়া এই শিক্ষার্থীরা ২০২০ সালে ৮ম শ্রেণিতে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাতেও অংশ নিতে পারেনি। এমনকি নবম শ্রেণির পরীক্ষাও দিতে পারেনি।
এসব দিক বিবেচনায় ২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ সালের পরীক্ষার জন্য ঘোষিত সিলেবাস অনুসারেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।তিনি এসময় আরও উল্লেখ করেন, ‘যদিও এই পুরো সময়টায় তারা টেলিভিশনের ক্লাসে এবং অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে, অ্যাসাইনমেন্ট করেছে। এসব ক্লাস এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলো ২০২২-এর পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ১৫০ কর্মদিবসের পরিমার্জিত পাঠ্যসূচি অনুসারেই পরিচালিত হয়েছে।’