এবিএনএ : আর মাত্র কয়েকদিন পরই নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিতে হবে হোয়াইট হাউজের চাবি। এখানেই কেটেছে দুই মেয়াদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালনকারী বারাক ওবামার। সময়টা নেহাতই কম নয়। বাড়ির প্রত্যেকটি ইট-কাঠ-পাথরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে স্মৃতি।
বিদায়ের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই যেন আবেগতাড়িত হয়ে পড়ছেন ওবামা দম্পতি। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট হলেও প্রিয় বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার দুঃখ আর পাঁচজনের চেয়ে আলাদা কিছু নয়।
স্মৃতির ঝাঁপি নিয়ে হোয়াইট হাউজ ছাড়বে ওবামা পরিবার। এই যেমন মিউজিকাল নাইট। নিয়ম করে হোয়াইট হাউজে বসত সংগীতের আসর। টানা আট বছর। হোয়াইট হাউজে গান-বাজনার ঐতিহ্য বরাবরই রয়েছে। সেই ঐতিহ্যকে আট বছর ধরে লালন করেছেন ওবামা-মিশেল দম্পতি। দুজনই যে গানপাগল! ক্লাসিক, কান্ট্রি, ব্লুজ, ব্রডওয়ে, গসপেল, মোটাউন, ল্যাটিন, জ্যাজ বাদ ছিল না কিছুই। সংগীতের মূর্চ্ছনায় মেতে উঠত গোটা হোয়াইট হাউজ।
শুক্রবার শেষবারের মতো আসর বসিয়েছিলেন বারাক ওবামা। হোয়াইট হাউজের দক্ষিণের লনে রীতিমতো তাঁবু টানিয়ে আসর বসানো হয়েছিল। জলি স্কটের ‘রান-রান -রান’ দিয়ে শুরু হলেও একে একে মঞ্চ মাতালেন ইয়োলান্ডা অ্যাডামস, আশার, দ্য রুটস, বেল বিভ দ্যভো, জ্যানেল মোনে, দ্য লা সোল, মিশেল উইলিয়ামসরা। প্রথম দর্শক সারিতে বসে সন্ধ্যাটি উপভোগ করতে দেখা গেল বারাক-মিশেলকে।
এর আগে মঞ্চে উঠেছিলেন বারাক ওবামা। আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রসিকতা করে বলেন, ‘আমি আজ গ্রিনের কোনো গান গাইব না’। এ সময় হাসিতে ফেটে পড়েন অতিথিরা।
হোয়াইট হাউজের এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা যে তার হৃদয়ের বড় কাছের, সে কথাও জানালেন ওবামা। মজা করে ওবামা বলেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার কয়েকটা সুবিধা আছে। আপনি এয়ার ফোর্স ওয়ান, মেরিন ওয়ান চড়তে পারবেন। আবার আপনার অনুরোধ কোনো তারকা ফেলতে পারবে না। শুধু ফোন করে বলতে হবে, হোয়াইট হাউজে আসর আছে, আপনি আসবেন? দেখবেন সে তারকা যত বড়ই হোক, ঠিকই চলে আসবেন।’
প্রত্যেক বছর ওবামার ডাকে হোয়াইট হাউজে কে আসেননি? সদ্য সাহিত্যে নোবেলজয়ী গায়ক বব ডিলান থেকে শুরু করে জেনিফার হাডসন, লস লোবোস, পল ম্যাককার্টনি, মিক জ্যাগাররাও এসেছিলেন ওবামার আসরে। হোয়াইট হাউজের এই দিনগুলো যে খুব মিস করবেন তা গোপন করেননি ওবামা। হোয়াইট হাউজের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সুন্দরভাবে লালন করেছেন তিনি।