এবিএনএ : স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হতে কে না চায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় আমাদের অভ্যাস আমাদের সচেতন হতে দেয় না। এর ফলে শত চেষ্টা করলেও সচেতন হয়ে ওঠা হয় না আর। আর এই অসচেতনাই ডেকে আনে বিপদ। ক্যানসার এমন একটি মরণব্যাধি রোগ, যা প্রাথমিক অবস্থায় অনেক সময়ই ধরা পড়ে না। যার ফলে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ভুগতে হয় অনেককেই। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ঠিক কী কী কারণে ক্যানসার হয়, তা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা না গেলেও, এর কিছু কারণ খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। একটি গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কিছু খাবার সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এই খাবার গুলি অজান্তে ডেকে আনতে পারে ক্যানসার।
১। রেড মিটঃ লাল মাংস তথা গরু বা ছাগলের মাংস আমাদের অনেকেরই প্রিয়। তবে রেড মিট বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। এর থেকে হতে পারে প্রাণঘাতী ক্যানসারও, এমনটাই দাবি গবেষকদের। তাই গবেষকরা মনে করছেন, অধিক পরিমাণে লাল মাংস খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা অবিলম্বে সেই অভ্যাস ত্যাগ করাই শ্রেয়। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, লাল মাংসে এন-নিট্রোসোডিয়েথিলামিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এ পদার্থের মাত্র দশমিক ০০০০৭৫ শতাংশ গ্রাম-ই শরীরে ক্যানসার উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট।
২। পরিশোধিত চিনিঃ পরিশোধিত চিনির ঝুঁকিও বিস্তর। এই চিনি স্থূলতার জন্য দায়ী। যুক্তরাজ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষ স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন সমস্যায় ভুগছে। পরিশোধিত চিনি নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছাড়াও ক্যানসার সেলের জন্ম দেয় শরীরে। এই চিনি থেকে তৈরি বিভিন্ন পানীয় শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কৃত্রিম চিনি অনেক ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী চিনির বিকল্প হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, এই কৃত্রিম চিনি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় সোডা ও কফি সুইটেনার্স। বাস্তবিক অর্থে এই কৃত্রিম চিনি রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণেও প্রভাব ফেলে। এতে ডায়বেটিস বৃদ্ধিসহ ক্যান্সারও হতে পারে।
৩। অ্যালকোহলঃ অতিমাত্রায় মদ্যপানের কারণে ত্বকের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় জানা গিয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করলে শরীরে এমন এক ধরনের প্রবণতা সৃষ্টি হয়, যাতে মানবদেহ সূর্যের সংস্পর্শে এলে ত্বকের উপর অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তারা বলেন, ইথানল মানবদেহে প্রবেশ করে এক ধরনের তেজষ্ক্রিয়তা বা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে, যা ত্বককে অতিবেগুনি রশ্মির প্রতি আরো সংবেদনশীল করে তোলে। আর এই সময় মদ্যপায়ীরা সূর্যের আলোর কাছাকাছি গেলে এবং সানস্ক্রিন লোশনের মতো কিছু ব্যবহার না করলে কয়েকগুণ বেশি মাত্রায় অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতির শিকার হয়। অ্যালকোহলের মাত্রা বেশি হলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
৪। প্রক্রিয়াজাত সাদা আটাঃ আটা শর্করা জাতীয় খাবার। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু প্রক্রিয়াকরণজাত সাদা আটা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভাল নয়। রিফাইন করার ফলে এই আটা তার সাধারণ পুষ্টিগুণাগুণ হারিয়ে ফেলে। আটার মিলগুলি এই আটা সংরক্ষণের জন্য বর্তমানে ক্লোরাইন গ্যাসে নামে একটি কেমিক্যাল ব্যবহার করছে, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।