আন্তর্জাতিকলিড নিউজ

প্রসব বেদনায় অযাচিত ওষুধ প্রয়োগে সতর্কতার নির্দেশ ডব্লিউএইচও’র

এবিএনএ : জটিলতা না থাকলে ওষুধ প্রয়োগে গর্ভধারীনির প্রসব বেদনা না বাড়াতে চিকিৎসক ও ধাত্রীদের প্রতি সতর্ক নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্বা স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি জানিয়েছে, চিকিৎসক ও ধাত্রীদের এই অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে অনেক নারীই এখন প্রাকৃতিকভাবে সন্তান জন্ম দেওয়ার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি নতুন নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। নতুন এই নির্দেশনায় শিশু ভূমিষ্ঠে ডব্লিউএইচও তার কয়েক দশক আগের নির্দেশনার সম্পূর্ন বিপরীত মত প্রকাশ করেছে। আগে বলা হয়েছিল, প্রসব বেদনা ওঠার প্রথম পর্যায়ে জরায়ু মুখ ঘন্টায় এক সেন্টিমিটার প্রশস্ত না হলে তা হবে ঝুঁকিপূর্ণ। এ পর্যায়ে প্রসব বেদনা বাড়াতে গর্ভধারীনিকে অক্সিটসিন জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয় এবং ব্যাথার জন্য শেষ পর্যন্ত এপিডিউরাল (ব্যথা কমানোর ইনজেকশন) প্রয়োগ করতে হয়। এর ফলে নারী ব্যাথাশূণ্য সন্তান প্রসব করেন এবং অনেক ক্ষেত্রেই সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম হয়। ডব্লিউএইচও’র রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের প্রধান ইয়ান আসকিউ বলেন, ‘অনেক নারী প্রাকৃতিকভাবে সন্তান প্রসব করতে চান এবং কোনো ধরণের চিকিৎসার সহযোগিতা ছাড়াই নিজেদের দেহের ওপর এ ক্ষেত্রে তারা আস্থা রাখতে চান।’
তিনি বলেন,‘এমনকি যখন চিকিৎসা প্রয়োজন হয় বা চাওয়া হয়, সেই সময়েও শিশু জন্ম দেওয়ার ইতিবাচক অভিজ্ঞতা অর্জন বা তাদের লক্ষ্যপূরণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের অর্ন্তভূক্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রতি বছর বিশ্বে ১৪ কোটি শিশুর জন্ম হয়। এদের অধিকাংশই জন্ম হয় কোনো জটিলতা ছাড়া। এরপরেও ঝুঁকি এড়ানোর নাম করে নারীদের চিকিৎসা সহায়তার (সার্জারি) লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়, যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় ও তাদের জন্য অনভিপ্রেত। বিশ্বব্যাপী সিজারের সংখ্যা অনেক বেশি এবং অধিকাংশ সার্জারির ক্ষেত্রে নিজেই ঝুঁকি বয়ে আনা হচ্ছে।
ডব্লিউএইচও’র পরিবার, নারী, শিশু ও কিশোর-কিশোরী বিভাগের সহকারী মহাপরিচালক ডা. প্রিন্সেস নথেম্বা সিমেলিলা বলেন, ‘আমরা চাই নারীরা যেন নিরাপদ পরিবেশে ভালো সুযোগ-সুবিধার মধ্যে অভিজ্ঞ ধাত্রীর মাধ্যমে সন্তান প্রসব করে। স্বাভাবিক সন্তান জন্মদান প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা সহায়তা নেওয়ার মাধ্যমে নারীর জন্মদান ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে এবং তার জন্মদান অভিজ্ঞতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রসব বেদনা যদি স্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে এবং মা ও শিশুর অবস্থা যদি ভালো থাকে, তাহলে প্রসব যন্ত্রণা বাড়াতে কোনো চিকিৎসা সহায়তার প্রয়োজন নেই।’

Share this content:

Back to top button