এবিএনএ: দেশের আইনশৃঙ্খলার পদ্ধতি ভাল। এখানে চাইলে ও ইচ্ছে করলেই কেউ কাউকে গুলি করতে বা ক্রসফায়ার করতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শনিবার ঢাকা ওয়াসার বুড়িগঙ্গা হলে ‘নিম্ন আয় এলাকার আদর্শ গ্রাহকদের সম্মাননা স্মারক বিতরণী’ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে র্যাবের সাবেক ৬ কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন ‘প্রতিবেদনটা এখনো আমার টেবিলে আসেনি। তারা কেন কিভাবে এই নিষেধাজ্ঞাটা দিয়েছে আমাকে দেখতে হবে। আমি যতটুকু শুনেছি তারা যে নিষেধাজ্ঞাটা দিয়েছে সবগুলোর ক্ষেত্রে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি হয়। তারা চেক করে যে দুর্ঘটনাটি হলো এর পেছনে যথাযথ কারণ ছিল। যদি কোনো গাফিলতি পায় তার বিরুদ্ধে মামলা চালু হয়ে যায়। আমাদের সিস্টেম কিন্তু সুন্দর সিস্টেম। এই সিস্টেমে কেউ ইচ্ছে করে ক্রসফায়ার বা গুলি করতে পারে না। যেসব ঘটনা ঘটেছে যথাযথ কারণ ছিল বলেই আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘এই সমস্ত ঘটনা শুধু আমাদের দেশে না পৃথিবীর সব দেশে এই ঘটনা চলছে এবং চালু আছে। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন কুমিল্লায় কয়েকজন সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে যেভাবে গুলি করেছিল, কোন নিরাপত্তা বাহিনী গিয়ে যদি বলে আপনারা আসেন তারা কি আসবে? সন্ত্রাসীরা যখন আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে তখন আমাদের নিরাপত্তারক্ষীরা আত্মরক্ষার্থে হয়তো অনেক সময় গুলি করে, তা যুক্তিসংগত ছিল কি ছিল না তা পরবর্তীতে তদন্তে উঠে আসে।’ এর আগে ওয়াসা আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে কলসি মিছিল হতো৷ মা-বোনরা মিছিল নিয়ে বের হয়ে আসতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় এখন আর সে পরিস্থিতি নেই।’
বস্তির মানুষের জন্য পানির ব্যবস্থা করায় ঢাকা ওয়াসাকে ধন্যবাদ জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘পানির যে যন্ত্রণা, সেটা আজ আমাদের নেই। বস্তিবাসীর পানির পয়সা কিন্তু সব সময় দিতে চাইতো। যেহেতু তাদের স্থায়ী ঠিকানা ছিল না। তাই ওয়াসা দিত পারত না। ওয়াসা যে পদ্ধতিটা বের করেছে, তাতে বস্তির মানুষ উপকৃত হচ্ছে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সারা ঢাকাই সন্ত্রাস কবলিত ছিল। আমিও ব্যবসায়ী ছিলাম। আমাকেও টেলিফোনে শুনতে হতো চাঁদা দাও। এখন পুলিশ বাহিনী সন্ত্রাসকে কন্ট্রোল করছে জন্যই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়াসার বোর্ড চেয়ারম্যান ড. প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা, চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম, ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র-ডিএসকের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, সাজেদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহেদা ফিজ্জা কবীর। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন বস্তিভিত্তিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ ও আদর্শ গ্রাহকরা উপস্থিত ছিলেন।