আমেরিকা

নিউইয়র্কে রিজভীর সংবাদ সম্মেলন যুক্তরাষ্ট্র আ’ লীগের বাঁধার মুখে পন্ড

এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি জনৈক রাজনীতিবিদের তথ্য সংগ্রহের জন্যএফবিআইকে ঘুষ প্রদান মামলার দন্ডপ্রাপ্ত আসামী রিজভী আহমেদ সিজারের সংবাদ সম্মেনে বাধা দিয়য়ে তা পন্ড করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মিরা। স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে একটি রেস্তোরাঁয় এ সংবাদ সংবাদ সম্মেলন হবার কথা ছিল।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরায় রিজভি আহমেদ সিজার সংবাদ সম্মেলন আহবান করেন। খবর পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানসহ শতাধিক নেতা-কর্মি উক্ত রেস্তোরাঁর আশপাশে অবস্থান গ্রহণ করেন। তারা প্রকাশ্যেই ঘোষণা দেন এই সংবাদ সম্মেলন প্রতিহত করবো। আওয়ামী লীগের এমন মারমুখী অবস্থানের খবর পেয়ে রিজভি আহমেদ সিজার পুলিশের সহযোগিতায় দেড় ঘন্টা বিলম্বে সংবাদ সম্মেলনে আসেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চেয়ারে আসন গ্রহনের পর সিজার তার লিখিত বক্তব্যের কপি সাংবাদিকদের মধ্যে বিতরণ করেন। এরপর তিনি ওই বক্তব্য পড়া শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মিরা ‘জয়বাংলা’শ্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থলে প্রবেশ করেন।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মিরা টেবিল-চেয়ার টেবিল ওলট পালট করে ফেলেন। এ সময় লাঞ্ছিত করা হয় রিজভির বাবা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনকে। তার মোবাইল ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে অভিযোগ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণযোগ্য নয় দেখে ঘটনাস্থলে উপস্থিত নিউ ইয়র্ক পুলিশের দুই সদস্য শেষ পর্যন্ত রিজভি আহমেদ সিজারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। লিখিত বক্তব্যে রিজভি আহমেদ সিজার বলেন, নিউ ইয়র্ক ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও আমাকে নিয়ে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এসব তথ্যের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবতার কোন মিল নাই। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে আদালতের মূল রায়কে পাশ কাটিয়ে কিছু উদ্দেশ্যমূলক অসত্য তথ্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জয় বা তার পরিবারের কাউকে অপহরণ কিংবা তাদের কোনো ক্ষতি করার অথবা ভীতি প্রদর্শনের কথা আদালতের রায়ে উল্লেখ নেই। অথচ কোনো কোনো সংবাদপত্র আমার স্বীকারোক্তি হিসাবে এ ধরণের কথা প্রকাশ করেছে, যা দুঃখজনক।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ সিজার বাংলাদেশের জনৈক রাজনীতিকের বিষয়ে গোপন তথ্য সংগ্রহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের দুই এজেন্টকে ঘুষ দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন বছরখানেক আগে। সেই মামলায় ঘুষ প্রদানের অভিযোগ স্বীকার করে নেওয়ার পর গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কের একটি আদালত সিজারকে ৪২ মাসের কারাদন্ড দেয়। এই ঘটনায় বাংলাদেশে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয় যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্যক্তিগত গোপন তথ্য সংগ্রহের জন্যই এফবিআই এজেন্টকে ঘুষ দিয়েছিলেন সিজার। এর বিনিময়ে তিনি এফবিআই এজেন্টদের কাছ থেকে জয়ের ব্যক্তিগত ব্যাংক তহবিলের হিসাব, বিভিন্ন ধরণের তৎপরতার রেকর্ডসহ অনেক তথ্য হাতিয়ে নিতেও সক্ষম হন বলে খবরে প্রকাশ। এছাড়া এফবিআই এজেন্টদের মাধ্যমে জয়কে অপহরণেরও চেষ্টা করা হয় বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

সংবাদ সম্মেলন ভন্ডুল করে দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান একই হলরুমে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য বক্তব্য দেন।

Share this content:

Related Articles

Back to top button