
এবিএনএ : দালাল আইনে যাদের নামে মামলা হয়েছিলো সে অনুযায়ী রাজাকারের তালিকা দেয়ায় অসঙ্গতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, তালিকার সঙ্গে একটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নোটও দেয়া হয়েছিল সেটা আমলে নেয়া হয়নি। নোট যাচাই-বাছাই করলে সকল সমস্যা কেটে যাবে। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কৃষক লীগের এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন। এসময় তিনি নিবিড়ভাবে যাচাই-বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানান।
মহান বিজয় দিবসের আগের দিন রবিবার ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নামও আসায় তা নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। এজন্য মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী দুঃখ প্রকাশও করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সরবরাহ করা রাজাকারদের তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই না করেই প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাজাকারের তালিকা নিয়ে একটা প্রশ্ন আসছে। আপনারা জানেন রাজাকারের লিষ্ট তৈরি করা দুরূহ ব্যাপার।’
‘মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় রাজাকারের লিস্ট করবে বলে আমাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল। যে সমস্ত তথ্য আমাদের কাছে আছে সেগুলো পাঠানো হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে দালাল আইনে যাদের নামে মামলা হয়েছিল, সেই দালাল আইনের লিস্টটা পাঠিয়ে দিয়েছি। সেই লিস্টে আমরা মন্তব্য করে দিয়েছি, অনেকের নামের মামলা উইথড্র করা হয়েছিলো। সেটা তালিকায় যাথাযথভাবে আসেনি। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের রাজাকারের তালিকা নিয়ে আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত হবে।’
‘একাত্তরের পর কোনও মুসলমান ভারতে যায়নি’ একাত্তরের পর কোনো মুসলমান ভারতে যায়নি মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘ভারত জানিয়েছে তারা কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানকে তাড়াবে না। তাদের এই অবস্থানকে আমি সাধুবাদ জানাই। কারণ কোনো মুসলমান ভারতে যায়নি। এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সেখানে আমি কথা বলতে চাই না। ভারতে গিয়ে আমি প্রথমেই বলেছি, তোমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে আমরা কিছু বলতে চাই না।’
‘‘কিছু দিন আগে ভারতের এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিলো- ‘বাংলাদেশ থেকে দেড় কোটি মানুষ নাকি ভারতে চলে আসছে?’ আমি তাকে বললাম আপনি যদি ১৯৪৭ সালের কথা বলেন, তখন দেড় কোটি ভারত থেকে আসছে, তখন দেড় কোটি গেছে, ঐ সময়ে কথা। একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে এদেশের হিন্দু ওই দেশে চলে গেছে, ওই দেশের মুসলমান এ দেশে চলে আসছে। এটা সর্বস্বীকৃত। কিন্তু ৭১-এর পর কোনো মুসলমান ভারতে যায়নি।’’ চলমান শুদ্ধি অভিযান বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন আমরা থেমে গেছি। আমরা আসলে থেকে নেই। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এই অভিযান চলমান রাখবো। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা তথ্যভিত্তিক অভিযান চালাবো। শুদ্ধি অভিযান চলমান থাকবে।’
এসময় দুর্নীতি, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও মাদকের বিরুদ্ধে শপথ নেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ। শপথ বাক্য পাঠ করান ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অন্যদের মধ্যে কৃষকলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
Share this content: