এবিএনএ : সরকার মানুষের ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা দিতে সাংবিধানিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। অথচ প্রশাসন ঘোষণা করল পয়লা বৈশাখে বিকেল পাঁচটার পরে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। এ সিদ্ধান্ত মধ্যযুগীয় চিন্তার প্রতিফলন এবং সংবিধানকে তাচ্ছিল্য করার প্রয়াস। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে পয়লা বৈশাখ ১৪২৩ উদ্যাপন নিয়ে নারী নিরাপত্তা জোটের সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিকেল পাঁচটার পর উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করা যাবে না—এই সিদ্ধান্ত বাতিল, উন্মুক্ত স্থানে নারী-পুরুষের চলাচলের উপযোগী করা, নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং নারী নির্যাতনের ঘটনায় অপরাধীকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়। এতে বলা হয়, দেশে লাগাতার নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও নারীবিরোধী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে উদ্বেগ ও সরকারের নিষ্ক্রিয় অবস্থানের নিন্দা জানানো হয়।
সুলতানা কামাল বলেন, সরকার নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য এ পদক্ষেপ নিয়েছে। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক পদক্ষেপ। কারণ তারা ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সামনে রেখে তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চাইছে না। পক্ষান্তরে যারা মুক্তবুদ্ধির মানুষ, তাদের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়ে দুর্বৃত্তদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।
নারীদের নিরাপত্তার জন্য সরকার কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না মন্তব্য করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, নারীদের অনবরত বলা হচ্ছে যে তোমার নিজের নিরাপত্তার দায়িত্ব তোমারই। নিরাপদ থাকতে হলে তোমাকে সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে হবে। তোমার পোশাকে নারীর সত্তা যেন কোনোভাবেই প্রকাশিত না হয়, কোনোভাবেই যেন নারীত্ব বিকশিত না হতে পারে। তিনি বলেন, সময় বেঁধে রাষ্ট্র পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিল, কোনো কারণে উৎসবের আমেজ, অনুষ্ঠান যদি পাঁচটার মধ্যে শেষ না হয় তাহলে রাষ্ট্র তোমার সুরক্ষার দায়িত্ব নেবে না। কিছু দুর্বৃত্তের ভয় দেখানোর কারণে সবার অধিকার ক্ষুণ্ন করা হলো। ভয়ের সংস্কৃতিকে সমর্থন দেওয়া হলো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেত্রী ফারাহ কবির, সেলিনা আহমেদ, জাহানারা প্রমুখ।