আন্তর্জাতিক

ব্রেক্সিটের অধীনে বৃটেন-অস্ট্রেলিয়া বাণিজ্য চুক্তিতে কয়েক বছর লাগবে

এ বি এন এ : বৃটেনের সঙ্গে ব্রেক্সিট নিয়ে বাণিজ্য চুক্তি করতে কয়েক বছর লেগে যাবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী স্টিভেন সিয়োবো বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি কেবল সঠিক সময়েই হতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য বৃটেন যদি আগামী বছর পর্যন্ত লিসবন চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় না করতে পারে, তবে সেই ‘সঠিক সময়’ তিন বছরও হতে পারে। তিনি বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে বৃটেন ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরুর পূর্ব পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হওয়া সম্ভব নয়। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়েছে, কোন কৌশলে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করতে হবে তা নিয়ে এখনও তেরেসা মে’র নেতৃত্বাধীন বৃটিশ সরকার কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি এমন উদ্বেগ রয়েছে। এ নিয়ে মন্ত্রিদের তোপের মুখেও পড়তে হতে পারে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীকে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। বৃটেন ও অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী যথাক্রমে লিয়াম ফক্স ও স্টিভেন সিয়োবো যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, এই দলটি ‘পারস্পরিক স্বার্থের বাণিজ্যনীতি’ নিয়েও আলোচনা করবে। আলোচনায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের সঙ্গে সম্পর্ক বা অন্যান্য দেশের সঙ্গেও সম্ভাব্য বাণিজ্য জোটের মতো ইস্যুও থাকবে। তবে বাণিজ্যসম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনার পর্যায়েই থাকবে বলে জানিয়েছেন সিয়োবো। তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত সময়ে’র আগে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হবে না। সেই সময় আসতে কত দেরি হবে তা যুক্তরাজ্যের ওপরই নির্ভর করবে। যুক্তরাজ্য যদি আগামী বছরেও অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করতে না পারে, তবে সেই উপযুক্ত সময় আরও ৩ বছরও হতে পারে। বিবিসি রেডিও ফোরের এক অনুষ্ঠানে সিয়োবো বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের জন্য আমার আনুষ্ঠানিক পরামর্শ হলোÑ আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তারা কোনো ধরনের দরকষাকষি বা চুক্তিস্বাক্ষরে সমর্থ নয়। আমরা অবশ্যই প্রাথমিক আলোচনা করতে পারি এবং এখানে অংশত সেটাই করছি আমি। ব্রেক্সিট-পরবর্তী অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। আমাদের আশা-আকাক্সক্ষা কেমন হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে কিছু বিন্যাসও দাঁড়াচ্ছে।’ কিন্তু এই প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা এখনই চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান সিয়োবো। সেই চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য বৃটেনকে প্রথমে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
খবরে বলা হয়, ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বৃটেন কীভাবে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করবে তা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’কে। চীন সফরে তিনি অভিবাসীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার মতো পয়েন্ট-ভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেন। ব্রেক্সিটের পক্ষের প্রচারণাকারীরা এমন ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছিলেন। তবে তেরেসা বলেছেন, এটা যুক্তরাজ্যে আগত অভিবাসীদের সংখ্যা রাতারাতি কমানোর জন্য ‘ঐন্দ্রজালিক কোনো সমাধান নয়’। ওদিকে ইউরোপের একক বাজারে যুক্তরাজ্যের থাকা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন তেরেসা সরকারের ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস। এটাও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। চলমান এসব বিতর্কে অনেকেই মনে করছেন, মন্ত্রিরা নিজেরাই ব্রেক্সিট নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা প্রসঙ্গে ‘সন্দিহান’। তাই ব্রেক্সিট ইস্যুতে বৃটিশ সরকারের অবস্থান প্রকৃতপক্ষে কী, সেটা জানার জন্য প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন তেরেসা।

Share this content:

Related Articles

Back to top button