এ বি এন এ : মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক নেতা সাখাওয়াত হোসেনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বাকি সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। বুধবার বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করে।
আট আসামির বিরুদ্ধে আনীত পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ২ ও ৪ নম্বর অভিযোগে সাখাওয়াতকে মৃত্যুদণ্ড ও বাকি আসামিদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এর আগে ১৪ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়।
আসামির মধ্যে জাতীয় পার্টির সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত ও বিল্লাল হোসেন বিশ্বাস শুনানির সময় আদালতে হাজির ছিলেন। তবে ইব্রাহিম হোসাইন, শেখ মো. মজিবুর রহমান, এম এ আজিজ সরদার, আব্দুল আজিজ সরদার, কাজী ওহিদুল ইসলাম এবং আব্দুল খালেক পলাতক রয়েছেন। এ মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামি মো. লুত্ফর মোড়ল কারাবন্দি থাকা অবস্থায় মারা গেছেন। এ কারণে আসামির তালিকা থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি সাখাওয়াত এক সময় ছিলেন জামায়াত নেতা। ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামী থেকে নির্বাচন করে যশোর-৬ আসন থেকে তিনি নির্বাচিত হন। তবে মেয়াদপূর্তির আগেই জামায়াত ছেড়ে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাখাওয়াত। এরপর বিএনপি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। পরে বিভিন্ন সময়ে এলডিপি ও পিডিপিতে ঘুরে গত সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ আসন থেকে তিনি জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছিলেন। সাখাওয়াত হোসেনকে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগ:
প্রথম অভিযোগ হলো যশোরের কেশবপুর উপজেলার বোগা গ্রামে এক নারীকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন এবং ধর্ষণের।
দ্বিতীয় অভিযোগ রয়েছে একই উপজেলার চিংড়া গ্রামের চাঁদতুল্য গাজী ও তার ছেলে আতিয়ারকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার।
তৃতীয় অভিযোগ হলো চিংড়া গ্রামের মো. নুরুদ্দিন মোড়লকে অপহরণ, আটক, নির্যাতনের।
চতুর্থ অভিযোগ কেশবপুরের হিজলডাঙার আ. মালেক সরদারকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও খুনের।
আর পঞ্চম অভিযোগ একই উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের মিরন শেখকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন এবং ওই গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের।