অর্থ বাণিজ্যলিড নিউজ

গ্রামে অতি দারিদ্র্যের হার বাড়ছে: বিশ্বব্যাংক

এবিএনএ : জনসংখ্যার তুলনায় গ্রামে অতি দারিদ্র্যের হার বাড়ছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তাদের এক গবেষণায় জানানো হয়, ২০১০ সালে যেখানে তিন মিলিয়ন (৩০ লাখ) গ্রামীণ জনসংখ্যা অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করতো সেটা বর্তমানে ৩.৩  মিলিয়ন হয়েছে।সোমবার দুপুরে শেরে বাংলানগরে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট ২০১৮’ প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।

প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সংস্থাটির মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর জিডিপির হার বাড়লেও সেই তুলনায় দারিদ্র্যসীমার হার কমছে না। এ থেকে বোঝা যায় বৈষম্য বেড়েছে। প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখতে পারছে না।’ রংপুরে কিছু এলাকায় দারিদ্র্যের হার বেড়েছে, রাজশাহী ও খুলনায় তেমন অগ্রগতি হয়নি বলে জানান তিনি। ২০১০ সালে বাংলাদেশে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ৭.৭ শতাংশ অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করতো জানিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ২০১০ সালে তিন মিলিয়ন অতিদারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করতো, যেটা এখন করছে ৩.৩ মিলিয়ন।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে।’

২০১৬ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্য হার ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল উল্লেখ করে রিপোর্টে জানানো হয়, প্রতি চারজনের একজনই দারিদ্র। জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দারিদ্র্যসীমার হার কমছে খুবই আস্তে আস্তে। ২০০৫ থেকে ২০১০ সালে দারিদ্র্য কমার হার ছিল ১.৭ শতাংশ। সেটা ২০১০ থেকে ২০১৬ তে কমেছে ১.২ শতাংশ।’ এসময় ড. জাহিদ হোসেন বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট তুলে ধরে জানান, চলতি অর্থবছরের (২০১৭-১৮) জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৫ থেকে ৬.৬ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জিডিপি ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হবে। জিডিপি নিয়ে সরকারের সমালোচনা নয়, এটা বিশ্লেষণের ব্যাপার। আমরা বিশ্লেষণের কথা বলছি।’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে গত নয় মাসে জিডিপি  প্রবৃদ্ধির হার ৭.৬৫ শতাংশ।জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনীতিকে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনের হার কম। রপ্তানি প্রথম নয় মাসে ভালো হলেও তা ২০১৬ সালের একই সময়ের চেয়ে ২.৭ শতাংশ কম। রপ্তানির বহুমুখিকরণের কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। ব্যাংকে তারল্য সংকটের কারণে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেই। বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে। এটা কমার লক্ষণ কম। ভোক্তা ব্যয় বেড়েছে যেটা চ্যালেঞ্জ।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতের বর্তমান ব্যবস্থা যেভাবে মোকাবেলা করছে তাতে বাংলাদেশ ব্যাংক জিপিএ-৫ এর মধ্যে ‘এ মাইনাস’ থেকে ‘এ’ পেতে পারে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কর্মযোগ্য মানবসম্পদ উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানো, মুদ্রাব্যবস্থা সংযতভাবে পরিচালনার পরামর্শ দেন। বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের  কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফ্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে ৭ শতাংশ জিডিপিতে গ্রোথ করছে। তবে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপি ঋণ কমানোর ব্যাপারে জোর দিতে হবে।’

Share this content:

Back to top button