
এবিএনএ : একাদশ নির্বাচনে ‘ক্ষমতায় যাওয়ার’ব্যাপারে বিভিন্ন কারণে আশা দেখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আশাবাদী হয়ে উঠছি অনেক কারণে। আমরা বলতে চাই, ২০১৮ সাল দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সাল। ২০১৮ সাল বিএনপির সাল। ২০১৮ সাল তারেক রহমানের সাল। ২০১৮ সাল এদেশের গণমানুষের সাল। যারা লড়াই করে, যুদ্ধকরে, এদেশের স্বাধীনতা এনেছেন তাদের সাল।
তিনি বলেন- আমরা আছি, লড়াই করেছি। লড়াই করে যাচ্ছি, লড়াই করব এবং ২০১৮ সালে আমরা অবশ্যই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব। মির্জা ফখরুল বলেন, কথা খুব স্পষ্ট- নির্বাচন তো দিতেই হবে। সেই নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, সেই নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এবং অবশ্যই তা সুষ্ঠু-অবাধ হতে হবে। একাদশ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই বিএনপি অংশ নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ সেই নির্বাচনে অবশ্যই খালেদা জিয়া আবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও দফতর সম্পাদক এস কে সাদীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কৃষক দলের সহ-সভাপতি এম এ তাহের, নাজিমউদ্দিন মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তকদির হোসেন জসিম, উলামা দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ নেসারুল হক, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
‘এই ভয়াবহ সরকারকে হটাতে হলে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন’- শুক্রবার গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের দেয়া এই বক্তব্য উদ্ধৃতি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার খুব ভালো লেগেছে উনি (কামাল হোসেন) এতোদিনে এই কথাটা (জাতীয় ঐক্য) উপলব্ধি করেছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি যে একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করুন। খালেদা জিয়া ডাক দিয়েছেন, জাতীয় ঐক্য দরকার। এই ভয়াবহ, ফ্যাসিস্ট, একনায়ক সরকারকে সরাতে না পারলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে না। তাই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের ‘চোখ-কান’ খোলা রাখার পরামর্শ দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা কথা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে। এটা রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞান। ক্ষমতায় যাওয়ার আমাদের লক্ষ্য কী? আমরা সবসময় শুধু এখানে মিটিং করব, আর ডুগডুগি বাজাব- তার জন্য তো আসিনি। আমরা ক্ষমতায় যাব। ক্ষমতায় গিয়ে আমরা আমাদের মেহনতি মানুষের সমস্যার সমাধান করব, আমরা চাকরির ব্যবস্থা করব, আমরা দেশের উন্নয়ন করব।
সেজন্য তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করছি। এই রাজনীতির একটা বিজ্ঞান আছে। বিজ্ঞানটা কী? সংগঠন, আন্দোলন, নির্বাচন। এই তিনটা জিনিস আমাদের একসঙ্গে করতে হবে। সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে, আন্দোলন করতে হবে এবং নির্বাচন করে আমাদের ক্ষমতায় যেতে হবে। এই বিষয়গুলো সবাইকে মনে রাখতে হবে। ‘দুর্নীতি-ঘুষ’ এই দেশ ছেয়ে গেছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, একটি পত্রিকা বলছে, উন্নয়নে নামে যে একটা ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে সেই উন্নয়ন আসলে একটা তাসের ঘর। শিক্ষিত যুবকদের ৪৭ শতাংশ কোনো চাকরি পায় না। প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। টাকা দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি পাবেন, টাকা দেবেন মেডিকেল কলেজের অনুমতি পাবেন, টাকা দেবেন ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনির্ভাসিটির অনুমতি পাবেন। ঘুম ও টাকা- এর উপরেই এখন সবকিছু চলছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন- প্রতিদিন পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থা একেবারে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। হাজার-হাজার, লাখ-লাখ কোটি টাকা লোপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। সব দিক দিয়ে, সব স্তরে, সব সেক্টরে বাংলাদেশকে ফোকলা করে ফেলা হয়েছে। অ্যামটি। যে কলসের মধ্যে পানি নাই, শব্দ করে বেশি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে এ সময় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
Share this content: