এবিএনএ : স্কুল মানেই সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠা। এর পর ইচ্ছা না থাকতেও তৈরি হওয়া এবং গুটি গুটি পায়ে মা কিংবা বাবার হাত ধরে স্কুলের পথে রওয়ানা হওয়া। একটা সময় ছিল যখন স্কুল বলতে ছিল বিশাল মাঠ। আর তাতে নানা ফলের গাছ, সেখানে লুটোপুটি, খেলাধূলা আর ছুটে বেড়ানো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব পাল্টে গেলেও স্কুল তার আগের জায়গাতেই আছে। স্কুলে যেতেই হয় সোনামণিদের।
বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুলের কথা বেশি বেশি মনে পড়তে থাকে। বন্ধুত্ব কিংবা ভালোবাসা স্কুল জীবনের এ অধ্যায়গুলো ভোলা যায় না। স্কুলে যাওয়ার সময় আবার থাকত নানা অজুহাত। কখনও পেটে ব্যথা আবার কখনও জ্বর। আর বছরে ঘুরে ঘুরে আসা পরীক্ষা যেনো স্কুলের আতংকের নাম ছিল।
এসব কিছুর পরও স্কুল এক স্বপ্নের রাজ্য। যেখানে মানুষ তার জীবনের ভিত্তি গড়তে শেখে। তার জীবনের পথচলার প্রথম হাতেখড়ি আসে এ স্কুল জীবন থেকেই। আর এ স্কুলের সবচেয়ে মজার সময় হচ্ছে নতুন বছর।
নতুন বছর মানেই নতুন বই, নতুন ব্যাগ, নতুন ক্লাস, নতুন পানির বোতল আর নতুন রং পেনসিল বক্স। হাজার কল্পকাহিনী নিয়ে গল্পের বই যাতে আছে রাজা রানী আবার কখনও সিন্ড্রেলার কাহিনী। তাই নতুন বছরের সব কিছুতেই শিশু চায় নতুনের ছোঁয়া। এটি শিশুর কোমল মনে যেমন স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ তৈরি করে তেমনি আপনার সঙ্গে শিশুর সম্পর্কতেও নতুনত্ব আনে। আপনি বুঝতে পারেন আপনার শিশু কেবল রঙের কেমন ডিজাইনের স্কুলের ব্যাগ, পেনসিল বক্স আর অন্যান্য সরঞ্জাম পছন্দ করছে।
সন্তানের জন্য স্কুল ব্যাগ কেনার সময় লক্ষ্য রাখুন তা যেন তার নিতে সুবিধা হয়। ব্যাগটা হতে হবে শিশুর দেহের ওজনের দশভাগের এক ভাগের নিচে। শিশুদের জন্য দুই বেল্টের ব্যাগ কেনা ভালো। এতে কাঁধে সমানভাবে চাপ পড়ে এবং শিশুর কাঁধে ব্যথা হয় না। চামড়ার ব্যাগের চেয়ে ক্যানভাসের ব্যাগ বেশি সুবিধাজনক। কারণ এর ওজন কম। আর ব্যাগ কেনার সময় লক্ষ্য রাখুন যাতে তা পানিরোধক হয়।
ব্যাগের ভেতর দরকারি জিনিস রাখার জায়গা আলাদা আলাদা করে দেয়া আছে কিনা তা দেখে নিন। স্কুল ব্যাগে কাঁধের দুটি স্ট্রাম্পের পাশাপাশি কোমরকে ঘিরে স্ট্রাম্প আছে কিনা তা দেখে নিন। এটি কাঁধের ওপর থেকে ওজন কমিয়ে পায়ের দিকে ওজনকে ছড়িয়ে দেয়।
স্কুল ব্যাগ হয়ে থাকে নানা ধরনের। কোনোটিতে রংবেরঙের পশুপাখি আবার কখনও বারবিডলের ছবিতে ভর্তি ব্যাগ। এর পাশাপাশি টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন, মিকি মাউস চরিত্রের ডিজাইনের ব্যাগ বাচ্চাদের খুব পছন্দ। পাখির আকৃতির কিংবা মাছের আকৃতির ব্যাগও পাওয়া যায় বাজারে। যা শিশুকে আকৃষ্ট করে স্কুলে যাওয়ার জন্য।
নতুন বছরে কেউ স্কুলে ভর্তি হয়েছে। আবার কেউ উঠেছে নতুন ক্লাসে। ছুটি-ছাটা শেষ। এখন আবার স্কুলে যাওয়া আসা শুরু হয়েছে।
অনেকটা সময় শিশুকে স্কুলে থাকতে হয়। আর এর জন্য এ সময় পানি খাওয়াটা খুব জরুরি। টানা একটা সময় পানি পান না করলে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই তার ব্যাগে সব সময় পানির বোতল রাখুন। এ ক্ষেত্রে বোতলটি যাতে আকর্ষণীয় হয় সে দিকে খেয়াল রাখুন। এতে শিশু পানি যেমন খাবে তেমনই পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে।
পানির বোতলের ক্ষেত্রে পছন্দ করতে পারেন প্লাস্টিক, স্টিলের, চাঁচের নানা ডিজাইনের পানির বোতল এবং ফ্লাক্স। তাতে থাকে ফড়িঙ্গের ছবি, আবার কখনও মুগলি চরিত্র কিংবা মটু পাতলু। এর সঙ্গে সঙ্গে আছে ওগি অ্যান্ড দ্যা কক্রোচেজ আর টম অ্যান্ড জেরির ছবি।
পেনসিল বক্স আর রঙ পেনসিল বক্স পছন্দ করে না এমন শিশু পাওয়া কঠিন। পড়া লেখায় মন না বসলে একটি শিশু থাকে তার আঁকা রঙের দুনিয়ায়। তাই শিশুকে রং পেনসিল এবং ওয়াটার কালার কিনে দিন। ছবি আঁকা শিশুর মনে না বলা কথা বলতে যেমন সাহায্য করে তেমনি তার মানসিক বিকাশেও সাহায্য করে।
খাবারের বেলায় কোনো শিশুই খেতে যায় না। তাই শিশুর টিফিক বক্স কেনার সময় রঙিন টিফিন বক্স নির্বাচন করুন। টিফিন বক্সে যাতে আলাদা আলাদা জায়গা থাকে তা দেখে নিন। শিশুর জন্য প্লাস্টিকের টিফিন বক্স নির্বাচন করা ভালো।
কোথায় পাবেন : যমুনা ফিউচার পার্ক, নিউমার্কেট, গাউসিয়া মার্কেট, বায়তুল মোকাররম মৌচাক মার্কেট, বসুন্ধরা সিটিসহ বিভিন্ন মার্কেট।
দাম : শিশুদের কাপড়ের স্কুলের ব্যাগ পাবেন ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। এর সঙ্গে নানা কার্টুনে আঁকা ব্যাগ পাবেন ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। দেশের বাইরে তৈরি ব্যাগ পাবেন ১ হাজার টাকার মধ্যে। পানির বোতল পাবেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। জলরঙের বক্স আকারভেদে পাবেন ১৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। মোম রঙের পেনসিল পাবেন ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। পেনসিল বক্স পাবেন আকারভেদে ১০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। টিফিন বক্স পাবেন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।