এবিএনএ : প্রতিবেশী দেশ ভারত মালবাহি ট্রেন চালিয়ে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে। ভারতে ব্যবহৃত ষ্ট্রিলের তৈরি ওয়াগন এবার বাংলাদেশ আসছে। বাংলাদেশে এই প্রথম ষ্ট্রেলের তৈরি ওয়াগন রেলওয়ে বহরে যুক্ত হচ্ছে। ভারতীয় কোম্পানি হিন্দুস্থান ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিডেটের তৈরি ৪২০টি ওয়াগন ক্রয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রোববার দুপুরে রেলভবন হলরুমে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে সই করেন প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান এবং ভারতীয় কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রদিপ গুহ সই করেন ওয়াগন কেনার ক্রয় চুক্তিতে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ রেল এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় রেল উন্নয়নে আমুল পরিবর্তন আসছে। আমরা ভারত থেকে রেল ইঞ্জিন-কোচ ক্রয় করছি-একই সঙ্গে রেল উন্নয়নে তাদের বিশেষ সহযোগিতাও পাচ্ছি। বর্তমানে ভারত রেলব্যবস্থা যতটা এগিয়ে গেছে, ঠিক ততটাই পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ রেল। তবে বর্তমান সরকার রেলে ব্যাপক উন্নয়ন করছে। আমরা রেলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভাবে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ভারতের সঙ্গে ৪২০টি ওয়াগন ক্রয় চুক্তি হয়েছে। এসব ওয়াগন খুবই উন্নত, আশা করছি-নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ওয়াগনগুলো রেলবহরে যুক্ত হবে। তিনি বলেন, রেলের লোকবল সস্বল্পতা রয়েছে। রানিং ষ্টাফসহ লোকো মাস্টারের সংকট আছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই লোকবল নিয়োগ করতে যাচ্ছি।
রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী জানান, চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে ক্রয় করা ৪২০টি মালবাহি ওয়াগন স্টেইললেস ষ্টিল বডির, সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে ওয়াগনগুলো। সর্বোচ্চ ১৮.৫০ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহন করা যাবে। ওয়াগনে থাকবে এয়ার ব্রেক সিস্টেম এবং পরিবেশবান্ধব হবে। এর আগে দেশে এমন অত্যাধুনিক ওয়াগন ক্রয় করা হয়নি। ওয়াগনগুলো রেলওয়ে বহরে যুক্ত হলে আরও মালবাহি ও গুডস ট্রেন চালানো যাবে। একই সঙ্গে ভারত থেকে আরও বেশি পরিমাণ মালামাল বাংলাদেশে আনা সম্ভব হবে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়ে ওয়াগনগুলো পাবো। ওয়াগনগুলো পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা মালবাহি ট্রেন চালাতে শুরু করবো। বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশনস ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (রোলিং স্টক প্রকিউরমেন্ট) আওতায় এসব ব্রডগেজ মালবাহী ওয়াগন কেনা হচ্ছে। ৪২০টি ব্রডগেজ মালবাহী ওয়াগন কিনতে রেলের ব্যয় হচ্ছে আনুমানিক ২৩১ কোটি ১৯ লাখ টাকা, যার অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার (জিওবি)। ৪২০টি ব্রডগেজ ওয়াগনের মধ্যে ২৯০টি কভার্ড ওয়াগন, ১১৬টি খোলা ওয়াগন এবং ১৪টি বগি ব্রেক ভ্যান। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রেলপথ সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী সহ বাংলাদেশে রেলওয়ের কর্মকর্তারা।