আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘের মহাসচিব হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে দুই নারী

এবিএনএ : জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন মোট নয়জন প্রার্থী। এখনো তাদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত হয়নি। তবে সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকার পর্বের পর তিনজনের সম্ভবনা বেড়েছে। ওই তিনজনের দুজনই নারী।

এগিয়ে থাকা প্রার্থীরা হলেন পর্তুগালের আন্তোনিও গুতিয়েরেস, নিউজিল্যান্ডের হেলেন ক্লার্ক ও বুলগেরিয়ার ইরিনা বোকোভা। উল্লেখ্য, গুতিয়েরেস ও ক্লার্ক উভয়েই তাঁদের দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। মধ্যপ্রাচ্যের একজন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই তিনজনকেই ‘ফ্রন্ট রানার’ বা অগ্রসর প্রার্থী হিসেবে চিহ্নিত করেন।

১২ থেকে ১৪ এপ্রিল প্রার্থীরা টানা ১৮ ঘণ্টা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সামনে এক প্রকাশ্য সাক্ষাৎকার পর্বে অংশ নেন। সদস্য রাষ্ট্র ছাড়াও সুশীল সমাজভুক্ত বিভিন্ন সংগঠন ও তথ্যমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এই প্রক্রিয়ায়। তাঁদের পাঠানো প্রায় এক হাজারটি প্রশ্ন ছাড়াও বিভিন্ন সম্পূরক প্রশ্নের সম্মুখীন হন প্রার্থীরা।

সাক্ষাৎকার পর্ব শুরুর আগে অনেকেই বুলগেরিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউনেসকোর মহাপরিচালক বোকোভাকে এক নম্বর প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। কিন্তু দুই ঘণ্টা স্থায়ী সাক্ষাৎকারে বোকোভা সবাইকে খুশি করতে পারেননি। অন্যদিকে, গুতিয়েরেস, যিনি বিশ্ব সংস্থার সাবেক উদ্বাস্তু হাইকমিশনার, অত্যন্ত খোলামেলা ভাষায় এই সংস্থার আমলাতান্ত্রিক সংকটের ছবিটি তুলে ধরে সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাব রাখেন। আর বর্তমানে ইউএনডিপির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বরত হেলেন ক্লার্ক সংস্থার উন্নয়ন বিষয়ক অগ্রাধিকার নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উপস্থাপন করেন। তার বক্তব্যে চমৎকৃত হয়েছেন অনেকেই।

বোকোভার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছিল রাশিয়া। কিন্তু তাঁর দুর্বল সাক্ষাৎকারের পর মস্কোর উৎসাহে ভাঁটা পড়েছে। এখন তারা চাচ্ছে, সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থীটি যেন জাতিসংঘেরন মহাসচিব হন। সংস্থার অনানুষ্ঠানিক নিয়ম অনুসারে পরবর্তী মহাসচিব পূর্ব ইউরোপ থেকে আসার কথা। জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত চুরকিন সাংবাদিকদের বলেছেন, এই আঞ্চলিক আবর্তন-ব্যবস্থা ধরে রাখার ব্যাপারে তাঁরা অনড় নন। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, রাশিয়ার এই পরিবর্তিত মনোভাবের ফলে সবচেয়ে লাভবান হবেন পর্তুগালের গুতিয়েরেস ও নিউজিল্যান্ডের ক্লার্ক।

জানা গেছে, যে নয়জন ইতিমধ্যে তাঁদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন, তার বাইরে আরও চার বা পাঁচজন প্রার্থী শিগগিরই তাঁদের সরকারের মাধ্যমে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন। ইতিমধ্যে যাঁদের নাম জানা গেছে, তাঁরা হলেন আর্জেন্টিনার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুসানা মালকোরা, কলম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া আঙ্গেলা হলগুইন, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড ও স্লোভাকিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিরোস্লাভ লাজাক।

এদিকে, পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে একজন নারীর নিয়োগ নিয়ে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে সংস্থার প্রায় ৬০টি দেশ। সুশীল সমাজের পক্ষ থেকেও সে দাবির সমর্থনে বহুমুখী প্রচারণা চলছে। কিন্তু সাক্ষাৎকার পর্বের শেষে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, নারী বা পুরুষের চেয়ে একজন যোগ্য মহাসচিব খুঁজে পাওয়াই এখন আসল চ্যালেঞ্জ।

চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর মহাসচিব বান কি মুন তাঁর মেয়াদ শেষে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন নতুন মহাসচিবকে।

Share this content:

Related Articles

Back to top button