এবিএনএ : ‘খাদিজা এখন নিজে খেতে পারে। যেকোনো লেখা সে পড়তে পারে, ধরে ধরে সে হাঁটতে পারে। যেহেতু তার সাধারণ এবং নিউরোজিক্যাল কন্ডিশন ভাল, তাই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে ডিসচার্জ দেয়া এবং ভাল কোথাও রিহ্যাব ফিজিওথেরাপি দেয়া দরকার।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন।
স্কয়ার হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসেস এর পরিচালক ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, খাদিজার জরুরি বিভাগে জিসিএস ছিল মাত্র ৫। সম্পূর্ণ অবচেতন অবস্থায় এবং বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেখানে সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, স্কুল বন বিস্তৃতভাবে থ্যাতলানো। ব্রেনের অন্যান্য অংশ গুরুতরভাবে আক্রান্ত। মিডলাইন থেকে সরে গেছে।
তিনি বলেন, সেদিনই তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। সেখানে নিউরোসার্জারি বিভাগের কন্সালট্যান্ট ডা. এ এস রেজাউস সাত্তারের নেতৃত্বে ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও মস্তিষ্কে ডিকমপ্রেসিভ সার্জারি করা হয়। এরপর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে তার অবস্থার উন্নতি ঘটতে থাকে। গত ১৭ অক্টোবর অর্থোপেডিক বিভাগের ডা. মেসবাহ উদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বে খাদিজার ডান হাতে মাল্টিপল ফ্লিক্সার টেনটন রিপেয়ার করা হয়।
ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকাকালীন তার ট্রেথসটমি করা হয়। ১৯ অক্টোবরে ক্লোজ করা হয় এবং এইচডিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তবে ওই সময় পর্যন্ত খাদিজা আশঙ্কামুক্ত ছিলেন না। ৭ নভেম্বর অর্থোপেডিক এবং নিউরোসার্জারি বিভাগ একসাথে আবারো অপারেশন করে। ৮ নভেম্বর তাকে কেবিনে স্থানান্তিরত করা হয়। একজন সাধারন মানুষের মতো খাদিজার জিসিএস এখন ১৫। তবে তার বাম দিক অবশ।
হাসপাতালের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবং সবার দোয়ায় সে এখন অনেকটাই সুস্থ। প্রধানমন্ত্রী স্কয়ার হাসপাতালের উপর যে আস্থা দেখিয়েছেন তার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার (প্রধানমন্ত্রী) প্রতি কৃতজ্ঞ বলে জানান এই চিকিৎসক।
উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজে বিএ (পাস) পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার সময় হামলার শিকার হন খাদিজা। এঘটনায় হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা বদরুলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করে জনতা। গুরুতর আহত খাদিজা এতদিন ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার করা হয়। কয়েকবার লাইভ সাপোর্টেও রাখা হয়।