এবিএনএ : উইসকনসিনের প্রাইমারি নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের টেড ক্রুজ ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়ে একাই এই রাজ্যের ৩৩ জন ডেলিগেট সংগ্রহ করেছেন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নিজের বাক্সে মাত্র ৩ জন ডেলিগেট যোগ করতে পেরেছেন। তৃতীয় প্রার্থী জন কেইসিক মাত্র ১৪ শতাংশ ভোট পেয়ে নিজের জন্য কোনো ডেলিগেট সংগ্রহে ব্যর্থ হন।
এর ফলে এই তিনজনের মোট ডেলিগেট সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়াল যথাক্রমে ট্রাম্প (৭৪০), ক্রুজ (৫১৪) ও কেইসিক (১৭১)। দলের মনোনয়ন পেতে প্রয়োজন ১,২৩৭ ডেলিগেট।
অন্যদিকে, ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে ৪৭ জন ডেলিগেট সংগ্রহ করেছেন। হিলারি ক্লিনটন তাঁর ৪১ শতাংশ ভোটের সুবাদে পেয়েছেন ৩৬ জন ডেলিগেট। এর ফলে তাঁদের মোট ডেলিগেটের পরিমাণ দাঁড়াল হিলারি (১,৭৪৮), স্যান্ডার্স (১,০২৭)। এর বাইরে হিলারির পক্ষে ৪৬১ ও বার্নির পক্ষে ৩১ জন সুপার ডেলিগেট (যাঁরা দলের কর্মকর্তা ও কংগ্রেসে নির্বাচিত প্রতিনিধি)। মনোনয়ন পেতে দরকার ২,৩৮৩ ডেলিগেটের সমর্থন।
এই নির্বাচনের ফলে উভয় দলের নির্বাচনী হিসাবে বড় ধরনের পরিবর্তন সূচিত হলো। ডেমোক্রেটিক দলে মোট ডেলিগেট হিসেবে হিলারি এখনো এগিয়ে, তবে তিনিই যে এই দলের ‘অনিবার্য’ প্রার্থী, সে কথা আর বলা যাচ্ছে না। এই নিয়ে গত আট নির্বাচনের মধ্যে তিনি পরপর সাতটি অঙ্গরাজ্যে পরাস্ত হলেন। উইসকনসিনে স্যান্ডার্স জিতবেন, একথা জানা ছিল। কিন্তু যে বিশাল ব্যবধানে তিনি জয় পেয়েছেন, তা হিলারি শিবিরে কিছুটা হলেও হৃৎকম্পের সৃষ্টি করেছে। সমর্থনের ‘ঢেউ’ এখন তাঁর পক্ষে, এই দাবি স্যান্ডার্স যুক্তিসংগতভাবেই করতে পারেন। তরুণ ও অপেক্ষাকৃত অধিক শিক্ষিত এমন শ্বেতকায়দের মধ্যে তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তা ২০০৮ সালে বারাক ওবামা যে উদ্দীপনা জাগিয়েছিলেন, তা মনে করিয়ে দিচ্ছে। চাঁদা সংগ্রহের ব্যাপারেও তিনি হিলারির চেয়ে এগিয়ে, ফলে ডেমোক্রেটিক নেতৃত্ব বার্নির উপস্থিতিতে যত বিরক্তই হোক না কেন, ভারমন্টের এই স্বঘোষিত ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ বাছাই পর্বের নির্বাচনী দৌড়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
মঙ্গলবার রাত্রে ওয়েওমিং বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার উৎসাহী সমর্থকের উল্লাস-চিৎকারের মধ্যে বার্নি ঘোষণা করেন, ‘আমেরিকার মানুষ যদি উঠে দাঁড়ায় এবং লড়াইয়ে যুক্ত হয়ে ভোট দিতে আসে, তাহলে আমরা অর্জন করতে পারি না, এমন কোনো কিছুই নেই।’
উইসকনসিনের ফলাফল হিলারিকে আহত করেছে, কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু তাঁকে মৃত ভাবার কোনো কারণ নেই। দুই সপ্তাহ পরে আসছে নিউইয়র্ক ও অন্যান্য পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে প্রাইমারি। মুখ্যত আফ্রিকান-আমেরিকান ও হিস্পানিকদের বিপুল জনসমর্থনে এখানে হিলারি ভালো করবেন, সব জনমত জরিপে সে কথাই দেখা গেছে।