আন্তর্জাতিকলিড নিউজ

মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন; তাও আবার ছেড়া পাঞ্জাবী পরে !

এবিএনএ : দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তার পর মন্ত্রিসভার ৫৮ জন সদস্য শপথ গ্রহন করেন। তাদের মধ্যে ৫৬তম নামটি , শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি। এমপি হিসাবে শপথ গ্রহনের পর যোগাযোগ গণমাধ্যমে বেশ আলোচনায় এসেছে তিনি। একটি ভাঙ্গা কুঁড়ে ঘর। আর একটি বাইসাইকেল। তাও আবার ২৫বছরের পুরোনো। ভারতের উড়িষ্যায় পরোপকারী এ মানুষটি লোকসভা নির্বাচনে জিতেছেন। মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। তাও আবার ছেড়া পাঞ্জাবী পরে।

প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি (৬৪)। তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, পশুপালন দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি উড়িষ্যার মোদি হিসেবেও খ্যাত। বৃহস্পতিবার ভারতের নতুন মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করে। সবচেয়ে বেশি হাততালি পেয়েছেন সবচেয়ে অখ্যাত এই মানুষটি। এতদিন উড়িষ্যার বাইরে তিনি খুব একটা পরিচিতও ছিলেন না। অথচ এখন তিনি ভারতের অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি।বাঁশ দিয়ে তৈরি কুড়েঘরে থাকেন তিনি। সাইকেলে চড়ে যাতায়াত করেন। লোকসভা নির্বাচনে অটোতে করে প্রচারণা চালিয়েছেন। লোকসভার সদস্য হওয়ার আগে প্রতাপ সারেঙ্গি উড়িষ্যার নীলগিরি আসন থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন।

২০০৪ ও ২০০৯ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জেতেন তিনি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরে যান এ বিজেপি নেতা। এবার লোকসভা নির্বাচনে উড়িষ্যার বালাসোর আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। বিজু জনতা দলের প্রার্থী রবীন্দ্র কুমার জেনাকে হারিয়েছেন ১২ হাজার ৯৫৬ ভোটে। উড়িষ্যার নীলগিরির গোপীনাথপুর গ্রামে এক গরীব ঘরে জন্ম প্রতাপ সারেঙ্গির। স্থানীয় ফকির কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেছেন। ইচ্ছা ছিল, সাধু হয়ে দেশ আর মানুষের সেবা করবেন। কিন্তু মঠের সন্ন্যাসীরা যখন জানলেন, তার বাবা মারা গেছেন, বাড়িতে মা একা, সঙ্গে সঙ্গে ফেরত পাঠিয়ে দেন মায়ের সেবা করার জন্য। মঠের সাধু না হতে পারলেও, তাদের মতো সাধারণ জীবনযাপনের অভ্যাস কখনো ছাড়েননি প্রতাপ। বিয়েও করেননি।

নির্বিবাদ এ মানুষটি নির্বাচনে জেতায় স্থানীয়রা যেমন খুশি, খুশি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তার সঙ্গে প্রতাপের বেশ খাতির। মোদি উড়িষ্যায় গেলে সারেঙ্গির সঙ্গে অবশ্যই দেখা করেন। শুধু বিজেপির রাজনীতিই নয়, তাদের মধ্যে মিল আছে আরেক জায়গাতেও। দু’জনেই রামকৃষ্ণ মিশনের সাধু হতে গিয়েছিলেন, দু’জনকেই সন্ন্যাসীরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। পাকাপোক্ত ভাবে গেরুয়া ধারণ না করলেও দু’জনেই এখন গেরুয়া শিবিরের সদস্য।

শহুরে জীবনের বিলাসিতা, চাকচিক্য, সুবিধা থেকে অনেক দূরে তার বসবাস। বালাসোরের এক ঝুপড়ি ঘরেই তার স্থায়ী ঠিকানা।মঠের সাধু না হতে পারলেও, তাদের মতো সাধারণ জীবনযাপনের অভ্যাস কখনো ছাড়েননি প্রতাপ। লোকে বলে, তিনি জীবের সেবা করেন, জেনেশুনে কখনো কারো ক্ষতি করেননি। ময়ুরভঞ্জ ও বালাসোরের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় দুস্থ শিশুদের জন্য স্কুল করে দিয়েছেন। এলাকার যেখানেই কিছুটা উন্নয়ন হয়েছে, সেখানেই কোনো না কোনো ভাবে তার অবদান রয়েছে।

নির্বিবাদ এ মানুষটি নির্বাচনে জেতায় স্থানীয়রা যেমন খুশি, খুশি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তার সঙ্গে প্রতাপের বেশ খাতির। মোদী উড়িষ্যায় গেলে সারেঙ্গির সঙ্গে অবশ্যই দেখা করেন। শুধু বিজেপির রাজনীতিই নয়, তাদের মধ্যে মিল আছে আরেক জায়গাতেও। দু’জনেই রামকৃষ্ণ মিশনের সাধু হতে গিয়েছিলেন, দু’জনকেই সন্ন্যাসীরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। পাকাপোক্ত ভাবে গেরুয়া ধারণ না করলেও দু’জনেই এখন গেরুয়া শিবিরের সদস্য।

Share this content:

Related Articles

Back to top button