
এবিএনএ : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি ও প্রাক্তন মন্ত্রী আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ‘সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে চাচ্ছে। কিন্তু দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশে অঘটন ঘটবে। আবার ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন হলে দেশে ভয়াবহতা সৃষ্টি হবে। আইয়ুব খানের যা হয়েছিল, আপনাদেরও তাই হবে। আর এর দায় আপনাদেরই নিতে হবে।’ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আবদুর রব বলেন, ‘আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বাঙালি জাতি মহাসংকটে পড়বে। যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আর একটা মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। জনগণের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি, সেই জনগণকে আজ কৃতদাস বানিয়ে রেখেছে। দুর্ভাগ্য হলো, জনগণের সরকার যদি প্রতিষ্ঠিত না হয় তাহলে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তারা স্বীকৃত পায় না। তাই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাহলে দেশে শান্তি ফিরে আসবে।’ শিশু ধর্ষণ, খুন, প্রশ্ন ফাঁস ও দুর্নীতির বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। সরকার একা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান আবদুর রব। খালেদা জিয়ার সাজার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘দুই কোটি টাকার জন্য তাকে সাজা দিয়েছেন। আপনাদের শত শত মামলা কোথায় গেল। হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হচ্ছে এর বিচার কই?’ গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধানের প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা আর কেউ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন চাই না। আমরা চাই দেশের মালিক জনগণ যেন নিজেদের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার প্রদান করতে পারেন। তারা যেন ভোটের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেন, যে ভোট হবে সব দলের অংশগ্রহণে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের মালিক দেশের জনগণ। সংবিধান মানুষকে সে অধিকার দিয়েছে। কিন্তু একদলীয় শাসকরা সেটি হরণ করেছে। আমাদের মাঝে ঐক্য তৈরি করতে হবে।’ গণফোরামের এ নেতা বলেন, ‘এ দেশ স্বাধীন হয়েছে তার মালিক জনগণের জন্য। এ দেশে কোনো একদলীয় শাসন, একনায়কতন্ত্র সরকারের জন্য নয়। পাকিস্তানিদের কাছ থেকে স্বাধীনতার পর যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছে তাতেই স্পষ্ট করেই এটা বলা আছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সামনের দিকে আসছে। কৃষি, পোশাক ও বিদেশি রেমিট্যান্স বাড়ছে। যার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে। কিন্তু কিছু লোক দেশের টাকা বাইরে পাচার করছে? কিন্তু কেন করছে তা আমার জানা নেই। দেশে কি বিনিয়োগের কোনো সুযোগ নেই? এসব রুখতে হলে দেশের জনগণকে মালিকের ভূমিকায় নামতে হবে। কারণ রাষ্ট্রের মালিক আপনারা জনগণ।’ আলোচনা সভায় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারার সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ও জাতীয় ঐক্যের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, এম এ মান্নান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Share this content: