
এবিএনএ : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মানুষ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। আর ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন জাহাঙ্গীর আলম। এরপর সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, মানুষ নিজ দায়িত্বে ভোট কেন্দ্রে আসছেন। সবাই সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দিচ্ছেন। গাজীপুরের মানুষ যাতে স্বতঃস্ফূর্ত ও সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেন, এ জন্য সবার সহযোগিতা চাই। আমরা সব দলের মানুষ, ভোটারকে স্বাগত জানাই। এ ভোটের মধ্য দিয়ে সবার অধিকার বাস্তবায়ন করা হবে।
আর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের কলেজ রোড টঙ্গী এলাকায় বছিরউদ্দিন উদয়ন একাডেমি কেন্দ্রে ভোট দেন হাসান উদ্দিন সরকার। এরপর কেন্দ্রের সামনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে আমার শঙ্কা আছে। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। আমার কর্মী-সমর্থকদের পুলিশ গ্রেফতার করছে। সব ভোটকেন্দ্রের অবস্থা দেখে বোঝা যাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কিনা। যে কৌশলে ভোট নেওয়া হচ্ছে, তাতে কয় শতাংশ ভোট পড়বে সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এদিকে বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, তিনি তফসিলের দিন থেকে মিথ্যাচার ও অভিযোগ করে যাচ্ছে। না জেনে-বুঝে সবকিছু বলছেন। কিন্তু এভাবে অভিযোগ এনে গাজীপুরের মানুষকে তিনি বিতর্কিত করতে পারেন না।জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিজয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। বিপুল ভোটে জয়ী হব। পরাজিত হলে ফলাফল মেনে নেবেন কিনা- এ প্রশ্নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলেন, জনরায় যা হবে সেটাই মেনে নেব। প্রত্যেক রাজনীতিবিদের এ মানসিকতা থাকা উচিত।
আর বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা পরও আমার নেতা–কর্মীদের হয়রানি ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে অভিযোগ জানাতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরছেন না। তারপরও জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণ যদি ফলাফল মেনে নেয়, তবে আমিও যেকোনো ফলাফল মেনে নেব।গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এরপর ভোটগণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই সিটি করপোরেশনে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। ২০১৩ সালে গঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আয়তন ৩২৯ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার পাঁচ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ ও নারী ভোটার পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৭টি। যার মধ্যে ১৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড। গত ৩১ মার্চ গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী গত ১৫ মে একসঙ্গে দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল। কিন্তু গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সীমানা নিয়ে সাভার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সুরুজের এক মামলায় আদালত গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। পরে নির্বাচন কমিশনের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে সে বাধা কেটে যায়। ইসি ২৬ জুন নতুন করে গাজীপুরে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে।রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় জানায়, এবার ৪২৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দায়িত্ব পালন করছেন আট হাজার ৭০৮ জন নির্বাচনী কর্মকর্তা। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে মোট ৪২৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন।
Share this content: