
এবিএনএ : বেশ কয়েক বছর পর আবারও বড় পর্দায় ফিরলেন জনপ্রিয় নায়িকা শিমলা। তবে এই ফেরাটা তার জন্য বিশেষ কিছু। ঢাকাইয়া কোনও ছবিতে নয়; শিমলার এই ফেরার হিসাব দেশের গণ্ডি পেরিয়ে গেছে। এবার প্রধান চরিত্র দিয়ে বলিউডে পা রাখলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেত্রী। কিংস এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত ও অর্পণ রায় চৌধুরী পরিচালিত হিন্দি ছবি ‘সফর’-এ মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন শিমলা। সম্প্রতি শেষ হয়েছে ছবির মুম্বাই শুটিং শিডিউল। প্রায় তিন-চার বছর পরে অভিনয়ে ফেরা, বলিউড আর নিজের জীবনের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এবেলার সঙ্গে কথা বলেছেন শিমলা। তিনি বলেন, আমি যখন প্রথম বুঝতে শিখছি, তখন থেকেই আমার খুব ইচ্ছে হতো যে আমি বড় হয়ে অভিনেত্রী হব। তখনও বিষয়টা পুরোপুরি বুঝতাম না কিন্তু মনে হতো যে এই কাজটা আমি পারব। তখন থেকেই আমি শুধু বাংলাদেশ নয়, এপার বাংলার ছবি, বলিউড ছবি, ইংলিশ মুভি সবই দেখতে শুরু করি।
ওপার বাংলার ছবির জগতে সেরা অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম জানতে চাইলে অভিনেত্রী বলেন, উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন। এছাড়া বলিউডের তিন খান তো অবশ্যই- শাহরুখ, আমির, সালমান। তার পাশাপাশি এখন ভাল লাগে রণবীর সিংহ, রণবীর কাপুর বা বরুণ ধাওয়ান। আসলে যে ছবিতে যে অভিনেতা বা অভিনেত্রী ভাল অভিনয় করেন আর কী। যেমন ঋত্বিক রোশনের একটা ছবি আমার খুব ভাল লেগেছিল— ‘ব্যাং ব্যাং’। প্রথম ছবি ‘ম্যাডাম ফুলি’-র জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন শিমলা। সাক্ষাৎকারে সে প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেন তিনি।
ওপার বাংলার ছবিতে কাজ করার ইচ্ছা নিয়ে শিমলা বলেন, কাজ করার ইচ্ছে তো ডেফিনিটলি আছে কিন্তু ঠিক সুযোগ হয়নি। দুই বাংলার কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে ভাষাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি যখন বাংলায় কথা বলছি, তখন আমার এক্সপ্রেশন এক রকম হবে আবার যখন ইংরিজিতে কথা বলব, তখন আমার বডি-ল্যাঙ্গোয়েজ আলাদা হয়ে যায়। যখন হিন্দিতে কথা বলব, তখন আবার অন্য রকম। সেক্ষেত্রে বলব যে অভিনয়টা একটু হলেও আলাদা হয়।
তাহলে ‘সফর’-এর আগে নিশ্চয়ই অনেক ওয়র্কশপ করতে হয়েছে আপনাকে? বলিউডে কোনও মেন্টর পেয়েছেন কি, যিনি আপনাকে সাহায্য করেছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি একটা নামই বলব— কিংশুক গুণ, যার প্রযোজনায় এই ছবিটা করছি। আমাকে হিন্দি ছবিতে ব্রেকটা উনিই দিয়েছেন। কিংদা-ই আমাকে শুটিং শুরু হওয়ার আগে অনেকটা সাহায্য করেছেন হোমওয়র্ক করতে। শিমলা বলেন, আসলে পরিচালকের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তিনি কীভাবে একজন আর্টিস্টকে প্রেজেন্ট করবেন। একজন পরিচালক সব সময় চায় যে সে যেটা চাইছে, আর্টিস্ট সেটা যেন বুঝতে পারে। অর্পণ আর আমার মধ্যে এই দেওয়া-নেওয়াটা খুব ভাল ছিল।সহশিল্পীদের কেমন লেগেছে সে প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি বলেন, কো অ্যাক্টর ভাল পাওয়াটা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। ‘সফর’-এ মেল প্রোটাগনিস্ট যিনি ছিলেন বা অন্য যাদের সঙ্গে আমার সিন ছিল, তার সবার সঙ্গে খুব ভাল জেলিং হয়েছে। তাদের ব্যক্তিগত ভাবে কেমন সেটা আমি বলতে পারব না বা অভিনয়ে কতটা ভাল সেটা ডিরেক্টর বলতে পারবেন কিন্তু আমার সঙ্গে অ্যাডজাস্টমেন্ট খুব ভাল ছিল।
শিমলা বলেন, পরিবারে সবাই খুব অ্যাপ্রিশিয়েট করছে। বাংলাদেশ থেকে কোনও অভিনেত্রী লিড রোলে হিন্দি ছবিতে কাজ করছে, এটা বাংলাদেশের জন্য খুব বড় একটা অ্যাচিভমেন্ট। আমি খুব খুশি যে আমার ভাগ্য এতটা ভাল। তিনি বলেন, প্রথম ছবিতেই ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি, আবার বলিউডের মতো একটা জায়গা, যেখানে প্রচণ্ড কম্পিটিশন চলে, সেখানে আমি এরকম একটা সুযোগ পেয়েছি। অনেক বড় বড় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আছেন আমাদের দেশে। তারাও নিশ্চয়ই কাজ করবেন। এটাই আনন্দ হচ্ছে যে, আমার নামটা সেই তালিকায় প্রথম দিকে থাকবে। শিমলা অভিনীত প্রথম সিনেমা ম্যাডাম ফুলির নির্মাতা ছিলেন শহীদুল ইসলাম খোকন। ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি।
Share this content: