এবিএনএ : ইসলাম অপর মানুষ সম্পর্কে সুধারণা পোষণকে উৎসাহিত করেছে নিরুৎসাহিত করেছে কু-ধারণা পোষণ তথা অপবাদ দেওয়াকে। অপবাদ দেওয়ার প্রবণতা এক মানুষের সঙ্গে অপর মানুষের সুসম্পর্কে চিড় ধরায়। সামাজিক ও জাতীয় ঐক্যের জন্যও প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে এ ধরনের প্রবণতা। যে কারণে ইসলামে অপবাদ দেওয়ার প্রবণতাকে ধিক্কার দেওয়া হয়েছে। ইসলামী দৃষ্টিতে অপর মুসলমানকে অপবাদ দেওয়া কবিরা গুনাহ। মহান আল্লাহপাক বলেন, ‘যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারীদের কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে।’ সূরা আহ্যাব-৫৮।
আল্লাহপাক আরও বলেন, ‘তোমরা একজন আরেকজনের দোষ তালাশ করে বেড়িও না এবং কারও অগোচরে গিবত কর না।’ হজরত আয়েশা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, নবীপাক (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন সেই হবে আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা নিন্দনীয় ব্যক্তি, যার অশ্লীল কথা শোনার ভয়ে মানুষ তার কাছ থেকে দূরে থাকে বা তার সংশ্রব ত্যাগ করে। বোখারি ও মুসলিম।
রসুল (সা.) আরও বলেন, ‘ওহে আল্লাহর বান্দাগণ! আল্লাহপাক তোমাদের ওপর থেকে অনুদারতা উঠিয়ে দিয়েছেন। তবে যে লোক তার মুসলিম ভাইয়ের ইজ্জত সম্মান নিয়ে যাচ্ছেতাই করে, তার ব্যাপার স্বতন্ত্র। সে অনুদারতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে অথবা ধ্বংস হয়ে যাবে।’ হজরত আবু হোরায়রা বর্ণিত মুসলিম ও তিরমিজি শরিফের এক হাদিসে আছে, ‘এক মুসলমানের জন্য আরেক মুসলমানের রক্ত ঝরানো, সম্পদ ও সম্ভ্রমহানি করা অবৈধ হারাম।’ মুসলিম বর্ণিত আরেক হাদিসে আছে, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই। কেউ কারোর প্রতি অত্যাচার চালায় না, একজন আরেকজনকে অসম্মান, অশ্রদ্ধা করে না। কোনো মুসলমানের জন্য এর চেয়ে জঘন্য কাজ আর নেই, সে তার মুসলিম ভাইকে ঘৃণা বা অশ্রদ্ধা করবে।’ সহিহ বোখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত হাদিসে রসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসেকি কাজ, আর তার সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত হওয়া কুফরি কাজ।’ হাকিম ইবনে হেব্বান, আহমাদ ও বায্যার হজরত আবু হোরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণনা করেন, একবার রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সমীপে অভিযোগ এলো ‘অমুক স্ত্রীলোক সারারাত নামাজ পড়ে এবং প্রতিদিন রোজা রাখে; কিন্তু সে তার প্রতিবেশীদের (তিক্ত কথায়) দুঃখ দেয়।’ রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তাতে কল্যাণ নেই, সে দোজখে যাবে।’ আল্লাহ আমাদের সবাইকে সদাচরণের তওফিক দান করুন।