এ বি এন এ : আমাদের খুব কম সংখ্যক লোকই ড্রাইভিং হুইলের পেছনে বসে নিখুঁত হওয়ার দাবি করতে পারি। তবে এমন কিছু লোক আছেন যারা সত্যিই জানেন কী করে নিরাপদ থাকতে হয়। তারা এটা বুঝেন যে, শুধু রাস্তার নিয়ম মেনে চললেই নিরাপদ থাকা যায় না। নিরাপত্তার বিষয়টি বরং ড্রাইভিং সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ বা সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সব সময়ই সবাধানে, নিরাপদে এবং মনোযোগ সহকারে আচরণের বিষয়। এখানে রইল দক্ষ ড্রাইভারদের পাঁচটি অভ্যাসের বিবরণ : ১. গতিসীমা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখেন দক্ষ ড্রাইভারদের সর্বপ্রথম এবং সম্ভবত সবচেয়ে স্পষ্ট জিনিসটি হলো, তারা জানেন কেমন গতিতে তাদেরকে গাড়ি চালাতে হবে। এটি সব সময়ই আপনার ধারণার মতো অত সরল-সোজা নয়। রাস্তার চিহ্নগুলো সব সময়ই পরিষ্কার নয় এবং অনেক মোটরযান চালকই রাস্তার মৌলিক নিয়মগুলো সম্পর্কে জানেন না। উদাহরণস্বরুপ, আপনি হয়ত জানেন না রাস্তার পাশ দিয়ে যদি লাইটের সারি থাকে তাহলে সব সময়ই ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০ মাইল গতিতে গাড়ি চালাতে হবে। যদি না ভিন্ন কোনো সিগনাল দেওয়া হয়। অনেক চালকই গতিসীমা জানার পরও তা মেনে চলেন না। এর বিপদও একেবারেই সোজা: গাড়ির ওপর যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে সামনে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটলে তা মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় না। ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড মটরিস্ট (আইএএম) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সারাহ সিল্লারস বলেন, “যারা বেশি গতিতে গাড়ি চালান তারা শুধু নিজেকেই ঝুঁকিতে ফেলছেন না। বরং অন্যদের জীবন নিয়েও খেলছেন।” ২. সড়কের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখেন আমরা এখন তাৎক্ষণিক যোগাযোগের দুনিয়ায় বসবাস করছি। সারাক্ষণই শুধু মোবাইল খুদে বার্তা, জরুরি ই-মেইল বা ফোন কলের উত্তর দিতে হচ্ছে। এমনকি যখন আমরা ড্রাইভিং হুইলের পেছনে বসে থাকি তখনও এসবের উত্তর দেওয়ার লোভ সামলাতে পারি না। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে মনোযোগ নষ্ট হয় এবং এটি খুবই বিপজ্জনক। আর এর ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়ে যায় উচ্চহারে। এ ক্ষেত্রে সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সোজা-সাপ্টা পরামর্শ হলো, গাড়ি চালানোর সময় যদি আপনাকে সত্যিই কোনো ফোন কল রিসিভ করতে হয় তাহলে হাতে ধরতে হয় না এমন কোনো ডিভাইসে তা রিসিভ করুন। আর কখনোই গাড়ি চালনারত অবস্থায় ই-মেইল বা মেসেজ টাইপ করবেন না বা পড়বেনও না। গাড়ি চালানো শেষ হলেই শুধু তা করুন। গাড়ি চালানোর সময় দক্ষ ড্রাইভাররা যে মোবাইল ফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলেন শুধু তাই নয়। মনোযোগ নষ্ট করতে পারে এমন যেকোনো আওয়াজই তারা এড়িয়ে চলেন। তারা কখনও রেডিও বা টেপ রেকর্ডারও শোনেন না। ৩. নিয়মিত ব্রেক কষেন সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ চালকদের ক্লান্তি। শুধু যুক্তরাজ্যেই বছরে ৩ হাজার দুর্ঘটনা ঘটে এই কারণে। সুতরাং দক্ষ চালকরা নিয়মিতভাবে বিরতি নেন এবং নিজেদের ব্যাটারি রিচার্জ করেন ও সতর্ক থাকেন। ৪. পাথর কঠিন ঠাণ্ডা ও শান্ত থাকেন ক্লান্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর চেয়েও বেশি বিপজ্জনক মাতাল বা মাদকাচ্ছন্ন অবস্থায় গাড়ি চালানো। কারণ এতে শুধু চালকের নিজের জীবনই ঝুঁকির মধ্যে থাকে না বরং যাত্রী, অন্য গাড়ি, পথচারী, সাইকেল আরোহী বা মোটরসাইকেলচালক এবং এদের সকলের পরিবারের জীবনও ঝুঁকিতে থাকে। ৫. তারা অতি আত্মবিশ্বাসী নন আপনি হয়ত সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক নিয়ম নীতিগুলো পুরোপুরি অনুসরণ করে গাড়ি চালান। নিজেকে বা অন্য কোনো সড়ক ব্যবহারকারীকে বিপদে ফেলতে চান না। এতে হয়ত আপনার আত্মবিশ্বাসও অনেক উঁচু। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, সড়ক নিরাপত্তার প্রধান চাবিকাঠি হলো, অতি বেশি আত্মবিশ্বাসী না হওয়া। তাহলে নিজের ভুলগুলো সম্পর্কে আপনার সচেতনতা থাকবে না। সুতরাং অতি আত্মবিশ্বাসী না হয়ে বরং সব সময়ই সতর্ক থাকতে হবে। – See more at: http://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2016/08/28/398866#sthash.tw9bYGGA.dpuf