এ বি এন এ : আমরা সর্বাবস্থায় আল্লাহতায়ালাকে স্মরণ করবো। কারণ তিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা, জীবন ও মৃত্যুদাতা। তিনি আমাদেরকে আলো-বাতাস দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তার অনুগ্রহ ছাড়া আমরা এক মুহূর্তও বেঁচে থাকতে পারবো না। শাকসবজি, ফলফলাদি, গাছপালা, পশুপাখি, নদী-সাগর, আকাশ-বাতাস, চাঁদ, সূর্য সব কিছুই তিনি আমাদের উপকারার্থে সৃষ্টি করেছেন।
আমাদের জন্য আল্লাহর রহমতের দরজা সবসময় খোলা আছে। আল্লাহ সর্বদা আমাদের সঙ্গে আছেন। যখন আমরা একা থাকি তখন তিনি আমাদের সঙ্গে দ্বিতীয়, যখন আমাদের সঙ্গে আরেকজন থাকেন তখন আল্লাহ আমাদের মাঝে তৃতীয় সঙ্গী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন, যেখানেই তুমি থাক না কেন।’ -সূরা মুজাদালা: ০৭
তিনি প্রতি মুহূর্তে আমার প্রতিটি কথা শুনছেন, প্রতিটা কাজ দেখছেন। তিনি সদা-সর্বদা উপস্থিত এবং তার জ্ঞানের পরিধি সর্বব্যাপ্ত। এই কথাটি আমরা বার বার নিজেকে স্মরণ করিয়ে দেবো এবং প্রত্যেক কাজের শুরুতে স্মরণ করবো।
সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরণ- এমন এক শক্তি; যা দুর্বলকে সবল করে এবং সব বিপদে সাহায্য করে। কারণ আল্লাহর স্মরণকারীর বিশ্বাস এই যে, সবকিছু আল্লাহর হুকুমেই হয় এবং আল্লাহর কোনো ফয়সালা বান্দার জন্য অশুভ নয়। আল্লাহর ফয়সালা মেনে নেওয়ার মাঝেই বান্দার সফলতা ও কল্যাণ।
কোরআনে কারিমে আল্লাহর স্মরণ বেশি বেশি করতে বলা হয়েছে। অন্য কোনো ইবাদত সম্পর্কে এমন কথা বলা হয়নি। বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ এমন এক বিষয়, যা মানুষকে সব ধরনের গোনাহ থেকে রক্ষা করে। তা এত সহজ যে, এর জন্য আলাদা করে বেশি সময় ব্যয় করার কিংবা অন্যান্য কাজ স্থগিত রাখার প্রয়োজন হয় না।
আল্লাহর স্মরণ হচ্ছে যাবতীয় ইবাদতের রূহ বা আত্মা। কোরআনে কারিমের ওয়াদা অনুযায়ী যখন কোনো বান্দা আল্লাহকে স্মরণ করে; তখন আল্লাহ তাকে স্মরণ করেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করবো এবং কৃতজ্ঞ হও অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ -সূরা বাকারা: ১৫২
সুতরাং আমরা যখন আল্লাহর স্মরণে নিজেদের মশগুল রাখি তখন এ কথা মনে করা কর্তব্য যে, স্বয়ং আল্লাহতায়ালাও আমাদের স্মরণ করছেন। দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা অর্জন করতে হলে, বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করা উচিত। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলতা অর্জন করতে পারো।’ -সূরা আনফাল: ৪৫
আমরা যদি সবসময় আল্লাহকে ডাকি বা তার স্মরণ করি, তবে তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দেবেন। আমাদের ক্ষমা করে দেবেন এবং দুনিয়া ও আখেরাতে মহাপুরস্কার দানে ধন্য করবেন। কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও স্মরণকারী নারী, তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।’ -সূরা আহজাব : ৩৫
অতএব, চলতে-ফিরতে, উঠতে-বসতে সর্বাবস্থায় বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। বিপদে-আপদে একমাত্র তাকেই ডাকতে হবে। তবেই তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দেবেন এবং সাহায্য করবেন। আল্লাহ আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।