এবিএনএ : গোটা ইন্টারনেটই তো ছবির দখলে। ফেসবুকেও তাই। কিন্তু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা সেই ছবিগুলো দেখতে পান না! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এবার তাঁরাও ‘দেখতে’ পারবেন ছবি। ফেসবুক নতুন একটি প্রযুক্তি চালু করবে, যা ফেসবুকের ছবিগুলো ‘পড়ে’ শোনাবে এবং তাতে কী আছে তাও জানিয়ে দেবে।
সুবিধাটি নিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গ গতকাল মঙ্গলবার তাঁর ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘প্রতিদিন আমরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ম্যাসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপে ২০০ কোটির বেশি ছবি শেয়ার করি। ছবি আমাদের আরও বেশি যুক্ত করে পরস্পরের সঙ্গে, নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে সাহায্য করে। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা দেখতে পান না বলে। আজ ফেসবুক অ্যাকসেসিবিলিটি নতুন এক সুবিধা চালু করছে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে ছবির বিষয়বস্তু স্বয়ংক্রিয়ভাবে বর্ণনা করবে।’ এর ফলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা জানতে পারবে তার বন্ধুরা কী শেয়ার করছে।
বর্তমানে কম্পিউটারে পর্দার লেখা পড়ে শোনানোর প্রযুক্তি চালু আছে। আছে ব্রেইল পদ্ধতি। কিন্তু ছবির বিষয়বস্তু পড়ে শোনানোর কোনো প্রযুক্তি নেই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে এখন থেকে ফেসবুক এ কাজটি করতে পারবে। এটি ছবির বিষয়বস্তুকে বিশ্লেষণ করবে। এরপর পর্দার লেখা পড়ে শোনাবে। ফলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা ছবিটির বর্ণনা শুনতে পারবে। ফেসবুক বলছে, নতুন প্রযুক্তির সফটওয়্যার এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা ৮০টির মতো একইরকম বস্তু এবং কার্যক্রমকে শনাক্ত করতে পারবে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে থাকবে। প্রতিটি ছবিতে ক্যাপশন হিসেবে এটি যুক্ত থাকবে। যত ছবি স্ক্যান করবে, ততই সমৃদ্ধ হবে এর ডেটাবেইস।
চোখের রেটিনার আলোকসংবেদী কোষকে ধ্বংসকারী রোগ রেটিনিটিস পিগমেন্টোসার কারণে দৃষ্টি হারানো ফেসবুক প্রকৌশলী ম্যাট কিং এবং তাঁর দল এই প্রযুক্তির উন্নয়নের পেছনে কাজ করছেন।
অনলাইনের সব বস্তু দেখার এবং জানার অধিকার সবার সমান—এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, তবে এগোচ্ছে সঠিক পথেই। যেকোনো বিষয় নিয়ে আলোচনায় এটি সবাইকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেবে।’
প্রসঙ্গত, গত মাসে টুইটারও একই ধরনের প্রযুক্তি যোগ করেছে। তবে ফেসবুকেরটা উন্নত এবং উপকারী বলে ধারণা হচ্ছে।
ফেসবুক আশা করে, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে ছবির মানুষটির চেহারা শনাক্ত করে বলে দিতে পারবে তিনি কে!