এ বি এন এ : ইউক্রেইনকে নিয়ে ইউরোপের দেশগুলো ও রাশিয়ার দ্বন্দ্বে জড়াতে আগ্রহী ছিলেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বুশ প্রশাসনের শুরু করা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা ওবামা নতুন করে কোন যুদ্ধ জড়াতে চাননি। প্রেসিডেন্ট নতুন করে কোনো যুদ্ধে না জড়াতে সমরকর্তাদের বলেছিলেন বলে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া ই-মেইল বার্তায় প্রকাশ পেয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ।
২০১৪ সালে ইউক্রেইন থেকে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে একে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করে রাশিয়া। ইউরোপের অন্য দেশগুলোর তীব্র সমালোচনা করলেও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সরাসরি এই যুদ্ধে জড়ায়নি। ন্যাটো বাহিনীর তৎকালীন প্রধান জেনারেল ফিলিপ ব্রিডলোভের সঙ্গে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক সেনা প্রধান কলিন পাওয়ালের ই-মেইল চালাচালিতে ওই দ্বন্দ্বে না জড়াতে ওবামার অরাজি থাকার বিষয়টি এখন প্রকাশ পেয়েছে।
ব্রিডলোভের ব্যক্তিগত ই-মেইলে দেখা যায়, তিনি ক্রিমিয়া সঙ্কটে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুক্ত হতে হোয়াইট হাউসকে রাজি করাতে কলিন পাওয়ালের কাছে ধরনা দিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ওবামার সায় না পাওয়ায় সাবেক সেনা প্রধান ও সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পাওয়েলের দ্বারস্ত হয়েছিলেন ব্রিডলোভ।
একটি ই-মেইলে ব্রিডলোভ লিখেছেন, ‘আমার ধারণা ভুল হতেও পারে, তবে মনে হচ্ছে, হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে ন্যাটো বা ইউরোপের সঙ্গে যেতে চাচ্ছে না। তারা মনে করছে, এটা হয়ত জাতিকে (যুক্তরাষ্ট্রকে) নতুন একটি হুমকির মুখে ঠেলে দেবে। আমি দুটি ক্ষেত্রে আপনার সহায়তা চাচ্ছি। প্রথমত যখন সবার চোখ আইএস-এ নিবদ্ধ, তখন কীভাবে এর সুযোগ আমরা নিতে পারি। দ্বিতীয়ত তাকে (প্রেসিডেন্ট ওবামা) কীভাবে এতে যুক্ত করা যায়। তিনি এটাকে হুমকি হিসেবে দেখছেন, চাচ্ছেন এটা আর বাড়তে না দিতে। আমাকে কোনো যুদ্ধে জড়াবেন না- এমনটাই তার মত।’
দুই বছর আগের এই ই-মেইলের বিষয়ে ব্রিডলোভ বলেন, একজন সমরকর্তা হিসেবে তিনি তখন অভিজ্ঞ একজন সমরনায়কের (পাওয়েল) পরামর্শ নিয়েছিলেন মাত্র।
পাওয়েল ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। জর্জ বুশের সময়ে ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি। এই দুটি পদে তিনিই দেশটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট ওবামা পূর্বসূরি বুশ জমানায় শুরু হওয়া ইরাক যুদ্ধের ইতি টানার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আট বছর আগে ক্ষমতা নেন। ইরাক ও আফগানিস্তানে সরাসরি যুদ্ধ থেকে সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনেন তিনি।
সৈন্য পাঠিয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানো থেকে কূটনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে দুই মেয়াদ দায়িত্ব পালন শেষে আগামী ডিসেম্বরে হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছেন ওবামা।