মুয়াজ্জিন আজান দেয় আর এ আওয়াজ শত শত হাজার হাজার মানুষ শ্রবণ করে এবং মুয়াজ্জিনের কথার সঙ্গে কথা মিলায়। এরপর মুয়াজ্জিনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে চলে আসে। অতএব, মুয়াজ্জিন যদি জান্নাতের টিকিট পায় তাহলে তার ডাকে সাড়া দানকারীরাও পাবে বলে আশা করা যায়। হাদিসে এসেছে, কাল হাশরের ময়দানে মুয়াজ্জিনের গর্দান অনেক লম্বা হবে, তার চেহারায় নূর চমকাতে থাকবে। একই সময়ে কয়েক মসজিদের আজান শুনলে প্রথম আজানের জবাব দিলেই হয়ে যাবে। তবে বেশি সওয়াব পেতে চাইলে প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা জবাব দিতে হবে। তবে সেই আজানেরই জবাব দিতে হবে যা সহি-শুদ্ধভাবে এবং সুন্নত তরিকায় দেওয়া হয়। ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ’-এর জবাব হলো তাই যা আজানে বলা হয়। ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ এবং ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’-এর জবাব হলো ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’। কিন্তু যদি কেউ এটা না জানে তাহলে হুবহু আজানের শব্দ বলে দিলেও জবাব হয়ে যাবে। ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’-এর জবাব হলো ‘সাদাকতা ওয়া বারারতা’। এ বাক্যের অর্থ হলো, হে মুয়াজ্জিন! তুমি ঠিক বলেছ যে, ঘুমের চেয়ে নামাজ ভালো। তাই ঘুম ছেড়ে নামাজ পড়তে মসজিদে এসে নামাজ আদায় করলাম। আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার এই নামাজের যদি প্রতিদান পেয়ে থাকি তাহলে হে মুয়াজ্জিন, তুমিও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। কারণ তুমিই তো আহ্বান করে মসজিদে আমাকে নিয়ে এসেছ। অনেকে ইকামাতের জবাব দেয় না, এটা ঠিক নয়। ইকামাতের জবাব দিতে হয়। ইকামাতের মধ্যে একটি বাক্য বেশি আছে। তাহলো ‘কাদকামাতিস সালাহ’। এর জবাব হলো ‘আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’। এই জবাবের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো বর্তমানে নামাজ আদায় ও মৃত্যু পর্যন্ত তার ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তৌফিক চাওয়া। অনেকে আমল করে কিন্তু সহিভাবে নয়। আমল যদি সহি না হয়, তাহলে তার ফলও সঠিক হয় না। যেমন মেশিন ভালো না হলে পণ্য ভালো হয় না। ফলে বিক্রি কমে যায়, কোম্পানি লোকসানের মুখে পড়ে। যে বস্তুর গুণ-মান ভালো হয় না, ভেজাল হয়, তা জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। উপরন্তু সরকারও কোম্পানির মালিককে জেল হাজতে পাঠায়। মানুষের আমল সহি করে দেওয়ার প্রথম দায়িত্ব বর্তায় আলেম, ইমাম, মুয়াজ্জিনের ওপর। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহিভাবে আজানের জবাব দেওয়ার তাওফিক দান করুন। লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা। – See more at: http://www.bd-pratidin.com/islam/2016/07/26/159317#sthash.lrqodTB8.dpuf