এবিএনএ : চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারায় এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে-বিপক্ষে দুই গ্রুপের উত্তেজনাকে ঘিরে পুলিশ-আনসার ও গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৭ জনের নাম উল্লেখসহ দুই হাজার জনকে আসামি করে তিনটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ ও সরকারি লোকজনের ওপর হামলার ঘটনায় বাঁশখালী থানার এসআই বাহার মিয়া বাদী হয়ে একটি, নিহত দুই সহোদর ও জামাতার পরিবারের পক্ষে বশির আহমদ বাদী হয়ে একটি এবং নিহত জাকেরের পরিবারের পক্ষে স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলায় ৫৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সহস্রাধিক আসামি করা হয়েছে। বশির আহমদের মামলায় বসতভিটা ও কবরস্থান রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক, বিএনপি নেতা লিয়াকত আলীসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মনোয়ারার মামলায় অজ্ঞাত ১৫০০-১৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) হাবিবুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত তিনটি মামলাই হয়েছে। বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থল ও আশপাশে রয়েছেন। সোমবার স্থানীয় হাজীপাড়া স্কুল মাঠে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে-বিপক্ষে দুই গ্রুপের সমাবেশের মাইকিংকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এরপরও দুই পক্ষের লোকজন সমাবেশস্থলে এলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এ সময় গ্রামবাসী, আনসার ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। তবে স্থানীয় লোকজনের দাবি, তারা ১৪৪ ধারা জারির বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
একই পরিবারের নিহত তিনজন হলেন গণ্ডামারা ইউনিয়নের চরপাড়ার আশরাফ আলী বাড়ির মরতুজা আলী (৩৫) ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম (৪৪), তাদের বোনের স্বামী জাকের হোসেন (৩০)। জাকেরকে সোমবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরা তিনজনই লবণের মাঠে কাজ করতেন। মরতুজার চার মেয়ে, দুই ছেলে, আনোয়ারের তিন মেয়ে, এক ছেলে এবং জাকেরের চার ছেলে রয়েছে। নিহত অপরজন হলেন একই ইউনিয়নের রহমানিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা জাকের আহমদ।