এবিএনএ: হংকং অচল করে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে শহরটির প্রধান সড়ক ও বাজারগুলো। অস্থিরতা বিরাজ করছে পুরো শহরজুড়ে। এর মধ্যে, সোমবার এক বিক্ষোভকারীকে গুলি করেছে পুলিশ। ফেসবুকে সম্প্রচারিত এক ‘লাইভ ভিডিও’তে ওই ঘটনা ধরা পড়েছে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই ঘটনায় উত্তেজনা আরো বাড়বে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি ও আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়, ফুটেজে দেখা যায় যে, হংকংয়ের সাই ওয়ান হো জেলায় মুখোশধারী এক ব্যক্তিকে আটক করার সময় নিজের পিস্তল বের করছেন এক পুলিশকর্মী। এ সময় অপর এক মুখোশধারী ব্যক্তি তার দিকে আগালে তাকে গুলি করে ওই পুলিশকর্মী।বিক্ষোভকারীদের অবরুদ্ধ করে রাখা এক রাস্তায় এই ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়নি। এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই আরো দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে ওই পুলিশ সদস্য। এতে আহত হন আরো এক মুখোশধারী। আহতদের একজ শিক্ষার্থী ছিলেন।
আল জাজিরা জানিয়েছে, এই ঘটনার পর থেকে পুরো হংকং অচল করে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। সেখানে সাধারণ ধর্মঘট চলছে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তা ও পরিবহণ ব্যবস্থা টার্গেট করছে। প্রায় সকল প্রধান হাইওয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শহরজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জায়গায় জায়গায় জড়ো হচ্ছে মানুষ।
স্থানীয় গণমাধ্যম অনুসারে, সোমবার সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে মেট্রো ও ট্রেন সেবা। শহরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে দাঙ্গা পুলিশ। ক্লাস বাতিল করে দিয়েছে বহু বিশ্ববিদ্যালয়। বিভিন্ন শপিংমলে ভাংচুর চালানো হয়েছে। গত সপ্তাহে পুলিশের হামলায় আহত এক শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার পর থেকে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে শহরটিতে।
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে হংকং সরকার এক প্রত্যর্পণ বিলের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই বিলে, হংকং থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডে সন্দেহভাজন আসামীদের প্রত্যর্পণ করার অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা জানায়, এমনটা হলে হংকংয়ে চীনের প্রভাব বাড়বে। সাবেক বৃটিশ কলোনি হংকং। গত শতকের শেষ দশকে চীনের সঙ্গে যুক্ত হয় অঞ্চলটি। কিন্তু ‘এক দেশ দুই নীতি’ ব্যবস্থার আওতায় বেশকিছুটা স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করে তারা। বিক্ষোভকারীদের অবিরাম কর্মসূচির মুখে প্রত্যর্পণ বিলটি বাতিল ঘোষণা করে হংকং কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে বিক্ষোভকারীদের দাবি ততই বেড়েছে। সব দাবি পূরণ করতে অস্বীকৃতি জানায় কর্তৃপক্ষ। চলতে থাকে বিক্ষোভ।