এবিএনএ : মানুষের জীবনে শখ, আহ্লাদ আর অভ্যাসের যেন শেষ নেই। কত বিচিত্র অভ্যাসই না থাকে এক একজনের। তাই বলে টয়লেটে শৌচকর্মের সময়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার? বিষয়টি কিন্তু আদতেই অবাক হওয়ার মতো না। কারণ স্মার্টফোনধারী অনেক ‘স্মার্ট’ মানুষের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে এই অভ্যাসটি। যেন ‘রথ দেখা ও কলা বেচা মতো’। অর্থাৎ টয়লেটের কাজটিও সুসম্পন্ন হলো, আবার ফেসবুক-ইউটিউবে ঘাঁটাঘাঁটিও বাদ পড়লো না।তবে একই সময়ে দুই কাজ সম্পন্ন করার এই অভ্যাসকে মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না গবেষকরা। সম্প্রতি কানাডার হ্যামিলটন সেন্ট জোসেফ হেলথকেয়ারের এক পরীক্ষায় টয়লেটে নিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনে প্রচুর পরিমাণে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া উপস্থিতি পাওয়া গেছে।ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার মতো রোগ ছড়াতে সক্ষম। এছাড়া বমি-জ্বরও হতে পারে এই ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে।ওই হেলথকেয়ারের কয়েকজনের ট্যাবলেট ও মোবাইল ফোনে জীবাণু নিয়ে এটিপি স্ক্যান টেস্ট করা হয়। এই টেস্টে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জৈব জাতীয় পদার্থগুলোও দেখা সম্ভব। সেখানে দেখা যায়, ট্যাবগুলোতে প্রচুর পরিমাণে জীবাণু ছিলো। ট্যাবের স্ক্রিনে সেগুলো খুবই নোংরা দেখাচ্ছিলো। যদিও খালি চোখে তা দেখা মুশকিল। এ ছাড়া প্রচুর ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া ও ফ্লু ভাইরাসও ছিল।গবেষণায় হেলথকেয়ারের কর্মকর্তা অ্যান বেয়ালেচোস্কি কানাডাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিসিকে বলেন, ‘মোবাইলগুলো খুবই নোংরা ছিল। এতে জীবাণু এতো থাকতে পারে তা আশা করিনি। আমাদের এখনই উচিত টয়লেটে মোবাইলফোন ব্যবহারের অভ্যাসটি ত্যাগ করা।তিনি আরও বলেন, ‘মোবাইল ফোন ডিভাইসগুলোতে ক্ষতিকারক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া জাতীয় জীবাণুর প্রজনন খুব দ্রুত ঘটে।’সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের কুইন ম্যারি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন’র এক গবেষণায় দেখা যায়, ব্রিটেনে প্রতি ছয়টি মোবাইলের একটির মধ্যে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত। এছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা নামক ভাইরাস ও অন্ত্রের ফিকাল ব্যাকটেরিয়ার মতো আরও জীবাণু দেখে যায়।কিন্তু কথায় আছে, ‘অভ্যাস যায় না মলে।’ তাই টয়লেটে ম্যাগাজিন কিংবা পত্রিকার বদলে যদি একান্তই মোবাইল ফোন ব্যবহার করাতে হয় তবে অবশ্যই আগে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। এর পর একটি কাপড়ের সাহায্যে মোবাইলটি ধরতে হবে।