এ বি এন এ : বিশ্বব্যাপী স্থূলতা এবং কার্ডিওভ্যাসকুলার রোগের মহামারী ঠেকাতে নিয়মিত ব্যায়ামের বিকল্প নেই। নিয়মিত ব্যায়াম এসব রোগ প্রতিরোধে ‘ম্যাজিক বুলেট’ হিসেবে কাজ করে। সম্প্রতি একটি জার্নালে মার্কিন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের দেয়া তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিয়মিত শারীরিক ব্যায়ামের পরিসংখ্যান হতাশাজনক। মাত্র ২০ শতাংশ আমেরিকান(২৩ শতাংশ পুরুষ এবং ১৮ শতাংশ নারী) পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়াম করেন এবং ৬৪ শতাংশ নাগরিক কখনোই শারীরিক ব্যায়াম করেননি।
ইউরোপের অবস্থাও নৈরাশ্যজনক। মাত্র ৩৩ শতাংশ ইউরোপিয়ান নাগরিক পর্যাপ্ত ব্যায়াম করেন। আর ৪২ শতাংশ নাগরিক কখনোই শারীরিক ব্যায়ামে অংশগ্রহণ করেনি। কার্ডিওলজি জার্নালের সম্পাদকীয়তে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার আটলান্টিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত চার্লস ই. শ্মিট কলেজ অব মেডিসিনের অধ্যাপকরা যাবতীয় তথ্য প্রমাণ মূল্যায়ন করেন।
সহ-লেখক অধ্যাপক চার্লস হেনিকেন্স বলেন, যদি নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রমের বিষয়টি একটি পিল বা বড়ি হত তাহলে সম্ভবত সবাই গ্রহণ করত। মধ্য বয়সে শরীরের ওজন বৃদ্ধি বা স্থূলতা কার্ডিওভ্যাসকুলার রোগ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, অস্টিওআর্থাটিস, অন্ত্রের ক্যানসারসহ অন্যান্য সাধারণ এবং মারাত্মক ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
নিয়মিত ব্যায়াম ওজন কমানো ছাড়াও রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, হার্ট অ্যাটাক, ট্রাইগ্লিসারাইড, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, কোলন ক্যানসার, স্তন ক্যানসার, প্রোটেস্ট ক্যানসার, বাত, মেজাজ, শক্তি, ঘুম এবং যৌন জীবনে ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে বলে লেখক চিহ্নিত করেছেন।
এত উপকার সত্ত্বেও লোকজন নিয়মিত ব্যায়ামে আগ্রহী নয় কেন? এই সম্পর্কে অধ্যাপক চার্লস হেনিকেন বলেন, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়ামের জন্য চেষ্টা এবং সময় দরকার। ব্যায়ামের তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা সম্পর্কে সীমিত সঠিক জ্ঞান বসে থাকার লাইফস্টাইলে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ইউরোপের ৪২ শতাংশ নাগরিক স্বীকার করেছেন, ব্যায়াম না করা পিছনে তাদের বসে থাকা লাইফস্টাইল দায়ী।
এফএইউ কলেজ অব মেডিসিনের অধ্যাপক ও সহ-লেখক ডা: স্টিভেন লুইস বলেন, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়ামের ভূমিকা নিয়ে প্রচুর ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ব্যায়ামের সময় ক্যালোরি গ্রহণ এবং ক্যালোরি ঝরানো। ফলে, ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের পরিবর্তে ক্যালোরি নিষিদ্ধ ডায়েট গ্রহণ করতে বলা হয়। এটিই সবচেয়ে বড় সমস্যা।