
এবিএনএ : সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) কর্মচারীরা। চালক শ্রমিকদের পাঁচ মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া পড়েছে। অনিয়মের কারণে অর্থাভাবে পড়া বিআরটিসি কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না।
রোববার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির গাবতলী বাস ডিপো উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে বেতন দাবি করেন কর্মচারীরা।
মন্ত্রীর বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে দর্শক সারি থেকে এক পরিবহনকর্মী কাঁদতে কাঁদতে উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, স্যার, আমার মা অসুস্থ, আমি পাঁচ মাস যাবৎ বেতন পাই না। আমার সংসার চলে না, স্যার আমি এখন কী করব? আমার বেতনের ব্যবস্থা করে দেন। আমার বেতন কবে পামু কন?
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রায় কয়েকশ পরিবহনকর্মী এসময় হাততালি দিয়ে সহকর্মীকে সমর্থন জানান। ওবায়দুল কাদের ওই পরিবহনকর্মীর রোদন শুনে বলেন, ‘ব্যবস্থা নিয়েছি। আগেই বলে দিয়েছি।’
বেতন হালনাগাদ করার আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিআরটিসিকে দুর্নীতিমুক্ত করা হবে। নতুন চেয়ারম্যান আসার পর থেকে শৃঙ্খলা ফিরে আসতে শুরু করেছে। আশা করি, দুর্নীতি, অনিয়ম, হয়রানি থেকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি পাবে বিটিআরসি।
বিআরটিসির চালক শ্রমিকরা জানান, প্রায় সব ডিপোতেই এক থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া পড়েছে। ডিপোগুলোথে কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। ডিপোতে বাস পরিচালনা থেকে টাকা আদায় হলেও, তা জমা পড়েনি বিআরটিসির সদর কার্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
পরে বিআরটিসি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, গত অক্টোবর পর্যন্ত লোকসানে ছিল রাষ্ট্রয়াত্ব পরিবহন সংস্থাটি। নভেম্বর থেকে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। ২০১৫ সালে অস্টম বেতন কার্যাকরে বেতন প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। কিন্তু বাসের ভাড়া না বাড়ায় বিআরটিসি’র আয় বাড়েনি। নতুন নতুন রুটে বাস চালু করে আয় বাড়ানো হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই বেতন হালনাগাদ করা হবে।
কর্মীদের বেতন দিতে না পারলে ডিপোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সুসজ্জিত মঞ্চ তৈরি করে বিআরটিসি। বিশাল মঞ্চ দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। মঞ্চে না গিয়ে সরাসরি নতুন ডিপোর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। নতুন বাসের কাছে গিয়ে বেলুন উড়িয়ে বলেন, ‘এসব মঞ্চ আয়োজন করে দেশের ক্ষতি হয়।’
মঞ্চে চারটি চেয়ার রেখে বাকিগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেস সড়ক পরিবহনমনন্ত্রী। একটি চেয়ারে মন্ত্রী বসেন। দুপাশের দুটি চেয়ারে মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিআরটিসি চেয়ারম্যান বসেন। অপরটি রাখা হয় স্থানীয় এমপি আসলামুল হকের জন্য। তিনি দেরি করে আসায় মন্ত্রী তাকে তিরস্কার করে বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আসতে দেরি করে কেন?’ স্থানীয় নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঞ্চে বসতে চাইলেও তাকে উঠতে দেওয়া হয়নি।
Share this content: