এবিএনএ : নব্য জেএমবির একাংশের ‘বড় হুজুর’ মাওলানা আবুল কাসেমকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক (ডিসি) মাসুদুর রহমান এতথ্য জানান। সকাল সাড়ে ১১টায় এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিং করেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর সেনপাড়া পর্বত এলাকা হতে নব্য জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা মুফতি মাওলানা মোঃ আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০০৯ সালে জেএমবির একাংশের আমির মাওলানা সাইদুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি বিদ্রোহী অংশ (নব্য জেএমবির) আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। মনিরুল ইসলাম বলেন, নব্য জেএমবির হামলাগুলো বড় হুজুরের অনুমতির প্রয়োজন হতো।
রাজধানীসহ সারাদেশে জেএমবির হামলাগুলোর সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা বা প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে তিনি জড়িত কী না তা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।
জানা গেছে, নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী ২০১৩ সালে বাংলাদেশে আসার পর ২০১৪ সালের শুরুর দিকে মুফতি মাওলানা আবুল কাশেমের সঙ্গে বৈঠক করে। তার গ্রামের বাড়ি উত্তরাঞ্চলে। কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নিহত আবদুল্লাহ জেএমবি নেতা তামিম চৌধুরীকে মুফতি মাওলানা আবুল কাশেমের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। তার সঙ্গে তামিম চৌধুরীর প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ওকরাবাড়ি মাদ্রাসায়। কাশেমের কাছে তার পরিকল্পনা জানায় তামিম। এর পরই কাশেম সংগঠনের আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে যোগ দিতে রাজি হন। তিনি জেএমবির পুরনো নেতা সুলতান মাস্টার, সারোয়ার জাহান ওরফে মানিক ওরফে নয়ন, রিপনসহ অন্য নেতাদের তামিম চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন। এর পরই শুরু হয় নতুন ধারার জেএমবির যাত্রা। পরে আবুল কাশেমকে ঢাকায়ও আনা হয়। গাইবান্ধার চরাঞ্চলে জঙ্গিদের যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল সেখানেও তিনি নতুন জঙ্গিদের মগজধোলাই করতে কয়েক দফা বয়ান দিয়েছেন।
২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে রাজধানীসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় একের পর এক জঙ্গি হামলা শুরু হলে তদন্তকালে পুলিশ মুফতি মাওলানা আবুল কাশেমের একটি ছদ্মনাম জানতে পারে। তিনি দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের রানীর বন্দরে ওকরাবাড়ি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। ছয় মাস ধরে তিনি ‘আত্মগোপনে’ছিলেন। জঙ্গিবাদে তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে আবুল কাশেম একাধিক বই লিখেছেন। তিনি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার সময় জেএমবির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।