নির্বাচনের দাবি বিশিষ্টজনদের
এবিএনএ: স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে দলীয় প্রতীক তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন উন্মুক্ত রাখা উচিত, যাতে দলমত নির্বিশেষে সবাই—বিশেষ করে যুবকরা—আংশগ্রহণ করতে পারেন। এ ছাড়া এসব নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন তারা, যাতে অবৈধ ক্ষমতার ব্যবহার, দলীয় প্রভাব ও দুর্নীতির সুযোগ না থাকে।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে গভার্নেন্স এডভোকেসি ফোরামের আয়োজনে ‘গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জনআকাঙ্ক্ষার আলোকে স্থানীয় সরকার সংস্কার’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি তোলেন বক্তারা।
সভায় গভার্নেন্স এডভোকেসি ফোরামের সমন্বয়কারী ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী স্থানীয় সরকার সংস্কার নিয়ে ফোরামের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সঞ্চালনায় ছিলেন ফোরামের সদস্য ও এনআরডিএস’র নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল।
সভায় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা বলেন, “স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় আমলাদের প্রভু মনে না করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের গুরুত্ব দিতে হবে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে জেলা পরিষদের অধীনে এনে তা বাস্তবায়ন করা দরকার।” তিনি নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ঘূর্ণায়মান সংরক্ষণ পদ্ধতির ওপর জোর দেন।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, “আমরা এখনও ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারিনি। ডিসি ও ইউএনওদেরকে এখনো ‘স্যার’ ডাকা হয়। প্রতীকভিত্তিক নির্বাচনের ফলে সংসদ সদস্য ও দলীয় নেতাদের প্রভাব, কালো টাকা এবং ‘মার্সেল পাওয়ার’ স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে প্রভাবিত করে। তাই এই নির্বাচনগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়া জরুরি।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, “এখন ভাবার সময়, ক্ষমতার দিক থেকে স্থানীয় সরকারকে কতটুকু এগিয়ে নেওয়া যায়। নির্বাচনের নামে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ না হয়ে যেন কেন্দ্রীকরণ না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জেলা পরিষদসহ সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী ও সমন্বিত করতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে তাদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বাড়ানো দরকার। নারী প্রতিনিধিদের জন্য আরও কার্যকর অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থারও দাবি তোলেন তারা।
Share this content: