আইন ও আদালতবাংলাদেশলিড নিউজ

সিটিসেল বন্ধের ওপর শুনানি ৩১ অক্টোবর

এবিএনএ : দেশের প্রথম বেসরকারি মুঠোফোন অপারেটর সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি ৩১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে ধার্য করা হয়েছে। এ সময় পর্যন্ত সিটিসেল কোনো কার্যক্রম চালাতে পারবে না।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার আদালতের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী সিটিসেল কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এই দিন ধার্য করেন।

গত ২০ অক্টোবর ৪৭৭ কোটি টাকার বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় সিটিসেলের (প্যাসেফিক বাংলাদেশ টেলিকম) তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল ও কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর বিরুদ্ধে গত সোমবার আপিল বিভাগে আবেদন করে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ। এরপর মঙ্গলবার ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন।

আদালতে এইদিনে সিটিসেলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও মাহবুব শফিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং বিটিআরসির পক্ষে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস ও খন্দকার রেজা-ই রাকিব।

এ প্রসঙ্গে সিটিসেলের আইনজীবী মাহবুব শফিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আবেদন শুনানির জন্য চেম্বার আদালত থেকে ৩১ অক্টোবর দিন ধার্য করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। ওই আদালতেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।’

বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই রাকিব বলেন, ‘সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল করে বিটিআরসির দেওয়া সিদ্ধান্ত চেম্বার আদালত স্থগিত করেননি। তবে এ বিষয়ে শুনানির জন্য ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে দিন ধার্য্য করেছেন। এর ফলে সেই সময় পর্যন্ত সিটিসেল কোনো কার্যক্রম চালাতে পারবে না।’

প্রসঙ্গত, বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য গত ১৬ আগস্ট প্রথম ও ২৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফা সিটিসেলকে শোকজ নোটিস দেয় বিটিআরসি। দ্বিতীয় নোটিসে পাওনা পরিশোধের ব্যর্থতায় সিটিসেলের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। পরে ওই নোটিস চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ। ২২ আগস্ট ওই রিটের শুনানি নিয়ে বিটিআরসির পক্ষ থেকে সিটিসেলকে দেওয়া শোকজ নোটিসের সময় পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে বিটিআরসি। এর পর ২৯ আগস্ট প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ অপারেটর সিটিসেল কর্তৃপক্ষকে বিটিআরসির বকেয়া পাওনা ৪৭৭ কোটি টাকা দুই কিস্তিতে পরিশোধ করতে সুযোগ দেন।

আদেশে বলা হয়, প্রথম এক মাসের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ এবং পরের কিস্তিতে এক-তৃতীয়াংশ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এই টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে সিটিসেল কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। নয়তো বিটিআরসি অন্য যে কোনো আইনি পদক্ষেপ চালিয়ে যাবে। এরই ধারাবাহিকতায় ৪৭৭ কোটি টাকার বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় গত ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল ও কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বিটিআরসি।

ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে।

Share this content:

Related Articles

Back to top button